মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করলো সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনা মারাত্মক সাংবিধানিক ব্যর্থতার দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মন্তব্য দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সরকারকে এই বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নইলে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নেবে আদালত, বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আগামীকাল এই
পাশাপাশি রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ওই দুই মহিলাকে গণধর্ষণও করা হয়েছ বলে অভিযোগ উঠেছে। তারপর উন্মত্ত জনতা তাঁদের নগ্ন করে রাস্তায় ঘুরিয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হতেই আজ সকালে অবিলম্বে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি এবং সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে আদালতে তলব করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন। তাঁরা উপস্থিত হলে তিনি বলেন, "গতকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলি নিয়ে আমরা খুব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসে গেছে। এই ঘটনা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা মনে করি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেই বিষয়ে আদালতকে অবহিত করা উচিত, যাতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের সহিংসতার জন্য মামলা দায়ের করা যায়। মিডিয়া এবং ভিজ্যুয়ালে যে দৃশ্য দেখানো হচ্ছে, তা গভীরভাবে সংবিধানকে লঙ্ঘন করে।"
"সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে মহিলাদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা গভীর, অতন্ত্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে মারাত্মক উদাহরণ", মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর এই ঘটনা গত ৪ মে'র, বুধবার রাতে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ভিডিওটি পুরনো, তা তিনি জানেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও অপরাধের ভয়াবহতা কমে যায় না।
মে মাস থেকে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী কি ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ, সে বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে আদালত। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়েও জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, "আমরা সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিছুতা সময় দেব, নইলে আমরাই পদক্ষেপ নেব।"
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ এই ঘটনায় পুলিশি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণ, বিবস্ত্র করে হাঁটানো, গণধর্ষণের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন