১০০ দিন ধরে মণিপুরে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এতে মানুষের মৌলিক অধিকার খণ্ডন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভারতের ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (IFF)।
গত ৩ মে, মণিপুরের চূড়াচাঁদপুরে শুরু হওয়া জাতিগত হিংসা মুহূর্তে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সেই দিন থেকেই গোটা রাজ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। তারপর ১০০ দিন কেটে গেলেও এখনও রাজ্যে চালু হয়নি ইন্টারনেট। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে IFF।
রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বীরেন্দ্র সিংহের প্রশাসন তড়িঘড়ি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। রাজ্যের মানুষকে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো খবর ও সবরকম হিংসায় মদতকারী প্ররোচনামূলক খবর থেকে দূরে রাখার জন্যই রাজ্য প্রশাসনের তরফে প্রাথমিকভাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে পরবর্তীকালে হাইকোর্টের তরফে রাজ্যে আংশিকভাবে পরিষেবা চালু করতে বললেও তা অমান্য করা হয়। বিশেষজ্ঞরা জানায়, ইন্টারনেট পরিষেবা আংশিকভাবে শুরু করাই যায়। কিন্তু তাতেও রাজ্যের জনসংখ্যার খুব অল্প অংশের চাহিদাও ঠিকমতো পূরণ করা যাবে না।
রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখা নিয়ে সরকারের তীব্র নিন্দা করে ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, “মণিপুরের মানুষদের দীর্ঘদিন ধরে দেশের নাগরিক হিসেবে তাঁদের মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।” সংস্থাটি আরও যুক্তি দিয়েছে, সরকার ভুয়ো ও প্ররোচনামূলক খবর ছড়িয়ে পড়া রুখতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছে। কিন্তু এতে ফল হচ্ছে উল্টো। মানুষ যা শুনছে তা স্বাধীনভাবে যাচাই করে নিতে পারছে না। ফলে মানুষের মধ্যে ভুল খবর আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি, মণিপুর সরকারের এই সিদ্ধান্ত টেলিকম সাসপেনশন অ্যাক্ট, ২০১৭ (নয়া সংশোধন ২০২০)-এর ২(২এ) নিয়মকে লঙ্ঘন করছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, সরকারের তরফে কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হলে তা কোনওভাবেই ১৫ দিনের বেশি বন্ধ করে রাখা যাবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন