মণিপুরে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ বিজেপি সরকার। বীরেন সিং সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে এবারে বিজেপি ছাড়লেন জনপ্রিয় মণিপুরী অভিনেতা রাজকুমার কাইকু। বৃহস্পতিবারই রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কাইকু। উত্তর-পূর্ব ভারতের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিজেপি নেতৃত্ব কাইকুকে দলে থেকে যাওয়ার জন্য অনেকবার অনুরোধ করলেও নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়েননি অভিনেতা।
বুধবার মণিপুরের বিজেপি সরকার রাজ্যে আরও ৬ মাসের জন্য বিতর্কিত আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল প্রিভেনশন অ্যাক্ট (AFSPA) বজায় রাখার কথা ঘোষণা করে। গেরুয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরেই বুধবার সন্ধ্যায় কাইকু জানান, “মণিপুরের মানুষই আমার কাছে প্রথমে প্রাধান্য পাবেন, তারপর আসে দল। তাই এই কঠিন সময়ে আমি রাজ্যের মানুষের পাশে থাকতে চাই। গত চারমাসেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যে চলা জাতিগত সন্ত্রাস থামিয়ে রাজ্যে স্বাভাবিক শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এটা খুবই বেদনাদায়ক একটা ঘটনা।”
কাইকু আরও জানিয়েছেন, “সত্যি বলতে আমি ভেবেছিলাম বিজেপির ডবল-ইঞ্জিন সরকার কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। আর ঠিক সেই কারণেই আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। এমনকি পর্যটনের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সরকার গুরুত্বপূর্ণ বদল এনেছে। তাই আমি ভেবেছিলাম, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মণিপুরের এই কঠিন সময়ে রাজ্যের পাশে এসে দাঁড়াবে এবং খুব সহজেই রাজ্যের স্বাভাবিক সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ জনজীবন ফিরিয়ে আনবে। আমি ভরসা করেছিলাম তাঁদের উপরে। কিন্তু রাজ্যের মানুষের কষ্টের দিকে কর্ণপাত না করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মণিপুরকে এড়িয়ে গিয়েছেন।”
উত্তর-পূর্ব ভারতের সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি রাজ্যের পুলিশ দুই ছাত্রের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে, গত কয়েকমাস ধরে নিখোঁজ ছিল তারা। আর ওই দুই ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনাই কাইকুকে বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত আরও পাকা করতে সাহায্য করেছে। তার উপর বুধবার রাজ্য সরকারের AFSPA আইন বজায় রাখার সিদ্ধান্তের পরেই ওই মণিপুরী অভিনেতার দল ছাড়ার সিদ্ধান্তে শিলমোহর পড়ে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন