মেয়াদ শেষ হওয়ার ৫ বছর আগে আচমকা ইউপিএসসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মনোজ সোনি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন তিনি। সূত্রের খবর এখনও তাঁর পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়নি। তবে অনেকেই মনে করছেন শিক্ষানবিশ আইএএস পুজা খেড়করের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসার কারণে বিতর্ক এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বছর ঊনষাটের মনোজ সোনি।
২০১৭ সালের ২৮ জুন ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (UPSC) একজন সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন মনোজ সোনি। ২০২৩ সালের ১৬ মে তাঁকে ইউপিএসসি-র চেয়ারম্যান করা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৯ সালের ১৫ মে। কিন্তু ৫ বছর আগেই তিনি ইস্তফা দিলেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে এমনই জানা যাচ্ছে। সামাজিক এবং ধর্মীয় কাজের সাথে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি।
তবে অনেকেই মনে করছেন পুজা খেড়করের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে ইউপিএসসি কর্তৃপক্ষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক আইপিএস এবং আইএএস অফিসারের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেউ কেউ দাবি করেছেন এই পরীক্ষায় ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে। সব জেনেও কমিশন নিশ্চুপ। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভুয়ো শংসাপত্র নিয়ে অনেকেই চাকরি করছেন। এই সমস্ত অভিযোগ অনবরত সামনে আসছে।
যদিও বিশ্বস্ত এক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মনোজ সোনির পদত্যাগের সাথে আইএএস অফিসার পুজা খেড়করের বিতর্কের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণ মনোজ সোনির ব্যক্তিগত বিষয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মহারাষ্ট্র ক্যাডারের আইএএস ব্যাচের অফিসার পুজা খেড়করের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। পুজা খেড়কর শিক্ষানবিশ অবস্থাতেই নিজের জন্য ব্যক্তিগত রুম এবং কাজ করার জন্য অধঃস্তন কর্মচারীর দাবি জানান। এই নিয়ে বিতর্কের শুরু হয়। এরপর একের এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। নিজের ব্যক্তিগত অডি গাড়িতে লাল-নীল বেকন লাইট লাগানো থেকে শুরু করে গাড়ির সামনে পিছনে ‘মহারাষ্ট্র সরকার’ –এর স্টিকার লাগানো –সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে। জমি দখল করে বাংলো বানান তিনি। একাধিকবার ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করেন।
আইএএস পূজা খেড়কর ইউপিএসসি পরীক্ষার অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্কে ৮২১ স্থান অর্জন করেন ওবিসি এবং পিডব্লুইবিডি ক্যাটেগরির পর্যায় থেকে। এই পর্যায়ে আদৌ তিনি পড়েন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সমস্ত বিতর্ক এড়াতেই মনোজ সোনি ইউপিএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
ইউপিএসসিতে যোগদানের আগে মনোজ সোনি গুজরাটের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'বারের উপাচার্য ছিলেন। এছাড়া ২০০৫-২০০৮ সাল পর্যন্ত বরোদার মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছিলেন। পাশাপাশি ১৯৯১-২০১৬ সাল পর্যন্ত সর্দার প্যাটেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পড়ুয়াদের পাঠ দিতেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন