গুরগাঁওতে সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। স্থানীয় মহম্মদপুরের ঝাড়সা গ্রামে রবিবার বিকেলের দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত দুই শ্রমিকের নাম দিলীপ (৪৫) এবং সাহাবুদ্দিন (২৯)। এঁদের বাড়ি যথাক্রমে আগ্রা এবং নরসিংহপুর।
পুলিশ সূত্র অনুসারে গতকাল বিকেলে স্থানীয় বাসিন্দা ভীম সিং ওই দুই ব্যক্তিকে তাঁর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের জন্য ডেকে আনেন। দিলীপ এবং সাহাবুদ্দিন ওই সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এই ঘটনার পর বিকেল ৫টা নাগাদ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ, দমকল এবং উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে এসে প্রায় চার ঘণ্টা পরে দুজনের দেহ উদ্ধার করে।
ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ এনে ভীম সিং-এর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং খাতায় কলমে নিষিদ্ধ থাকলেও এই দুই শ্রমিক কোনোরকম সরঞ্জাম ছাড়াই সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন।
এই প্রসঙ্গে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, নিহত দুই শ্রমিক কোনোরকম সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন। সেপটিক ট্যাঙ্কে নামার পরেই ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে ওই দুই শ্রমিক অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
গত ২ আগস্ট, সংসদে সামাজিক ন্যায় ও সশক্তিকরণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামদাস অটওয়াল বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে দেশে কোনও অস্বাস্থ্যকর সেপটিক ট্যাঙ্ক পাওয়া যায়নি, যার কারণে কোনও সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।'
যদিও, সরকারি রিপোর্টেই প্রকাশ, গত পাঁচ বছরে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ৩৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এই মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী রাজ্যে এ কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন সাফাই কর্মী।
এরপরেই তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কার করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটেছে ৪৩ জনের। দিল্লিতে ৪২ জনের, মহারাষ্ট্রে ৩০ জনের, হরিয়ানায় ৩৬ জনের, গুজরাটে ২৮ এবং পাঞ্জাবে ১৪ জনের। এছাড়া, নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার সময় চণ্ডীগড়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এই প্রসঙ্গে গত ৪ আগস্ট এক ট্যুইট বার্তায় সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ট্যুইটারে লেখেন, 'আবার মিথ্যাচার! সংসদে মোদী সরকার বলেছে, দেশে কোনও বিপজ্জনক সেফটি ট্যাঙ্ক বা নর্দমা নেই। আর এই অছ্যুৎ কাজের কারণে কোনও মৃত্যু ঘটেনি।! কিন্তু আবার সরকারই স্বীকার করেছে যে, গত ৫ বছরে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ৩৩০ জন মানুষ মারা গেছেন!
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন