স্কুলের মিড-ডে মিলে ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে শুধু নুন আর ভাত। তাঁদের দেওয়া হচ্ছে না কোনও সবজি তরকারি বা ডাল। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা জেলার ফৈজাবাদের এক সরকারি প্রাথমিক স্কুলে এই ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিককে জানিয়েও কোনও সমাধান মেলেনি।
সম্প্রতি, একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতেই উঠে এসেছে যোগী রাজ্যে সরকারি স্কুলের এই চিত্র। জানা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে এই ঘটনা প্রথম নয়। গত তিন সপ্তাহ আগে, দেওরিয়া জেলায় স্কুলের মিড-ডে মিলে ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে নুন-ভাত। সরকারের নির্ধারিত ‘সুষম খাদ্য’ তালিকাকে পাশ কাটিয়ে, বঞ্চিত করা হয়েছে সাধারণ বাড়ির ছেলেমেয়েদের।
গত বছর, সেপ্টেম্বর মাসে মিড-ডে মিল (MDM) প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘PM Poshan’ করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, শুধুমাত্র খাবার প্রদান নয়, এর পরিবর্তে একটি শিশুর পুষ্টির স্তরের উপর বেশি মনোযোগ দেওয়া। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এক বছর পার করেও মোদী সরকারের উদ্দেশ্যকে কার্যকর করতে পারেনি উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার।
জানা যাচ্ছে, মিড-ডে মিল স্কিমে শিশুদের ভাত, ডাল এবং সবুজ শাকসবজি দেওয়ার কথা জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট দিনে দুধ এবং ফলমূল খাদ্য তালিকায় রাখা হয়েছে। আর, তা বড় বড় করে লেখা আছে স্কুলের ভিতরেই দেওয়ালে।
বর্তমানে, গরীব পরিবারের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলে পড়াশুনা করে। তাঁদের মধ্যে সন্তোষ নামে এক দিনমজুর জানান, তাঁর দুই সন্তান এই স্কুলের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, স্কুলটি আমাদের গ্রাম থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে। তাই বেশিরভাগ শিশুই দুপুরে স্কুলের দেওয়া খাবার বাড়ি নিয়ে আসে। তারপর, টিফিন করে তারা স্কুলে ফিরে যায়। কোনও সবজি বা ডাল ছাড়ায় তাদের নুন-ভাত দেওয়ায় আমরা বিরক্ত হয়েছিলাম। এ নিয়ে আমরা প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ জানালেও, তিনি গুরুত্ব দেননি।
জানা যাচ্ছে, অযোধ্যায় এই নুন-ভাত কাণ্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। শুরু হয়েছে তদন্ত। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
পুরো বিষয়টিকে 'গুরুতর ত্রুটি' বলে অভিহিত করে অযোধ্যার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নীতীশ কুমার। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশ অনুসারে, জেলা জুড়ে মিড-ডে মিলের মেনু ঠিক করা হয়েছে। কিছু দিন তাদের ফল এবং দুধও দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধান শিক্ষকা একতা যাদব এবং সহ-শিক্ষিকা গায়ত্রী দেবীকে বরখাস্ত করেছি। এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এটা সত্য যে, শাক-সবজি না দেওয়ায় নুন দিয়ে ভাত খেতে বাধ্য হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। এটি একটি গুরুতর ঘটনা।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন