মুসলিম ছাত্রকে তার হিন্দু সহপাঠীদের দ্বারা চড় মারতে বাধ্য করার ঘটনাকে ‘সামান্য ছোট ঘটনা’ বলে উল্লেখ করলেন উত্তরপ্রদেশের সেই শিক্ষিকা। শুক্রবার ওই শিক্ষিকার ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি তার পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে এক মুসলিম ছাত্রকে চড় মারার নির্দেশ দিচ্ছেন।
এই ঘটনার সাথে কোনও রকম সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা তৃপ্তি ত্যাগী। তিনি মিডিয়ার সামনে জানিয়েছেন, “এটি একটি ছোট ঘটনা। আমার এরকম কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। শিশুটির বাবা-মা আমাকে বলেছিলেন আমি যেন শিশুটির পড়াশোনার প্রতি কঠোর থাকি। আমি প্রতিবন্ধী। তাই আমি আমার কিছু ছাত্রকে তাকে চড় মারতে বলেছি, কারণ সে বাড়ির কাজ করে আসেনি।“
তিনি বলেন, “আমি আমার ভুল স্বীকার করছি। কিন্তু অকারণে এটিকে বড় ইস্যুতে পরিণত করা হয়েছে। রাহুল গান্ধী সহ একাধিক রাজনীতিবিদ এটা নিয়ে টুইটও করেছেন। আমি তাঁদের বলতে চাই, এটা টুইট করার মতো এত বড় বিষয় ছিল না। এই ধরনের দৈনন্দিন বিষয়গুলি ভাইরাল হলে শিক্ষকরা কীভাবে শিক্ষা দেবেন?”
উল্লেখ্য, ৪০ সেকেন্ডের ওই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা চেয়ারে বসে রয়েছেন। শিক্ষিকার পাশে মুসলিম ছাত্রটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাকে অন্য পড়ুয়ারা পর পর এসে মেরে যাচ্ছে। এমনকি, শিক্ষিকা এক ছাত্রকে তিরস্কারও করেন মুসলিম পড়ুয়াটিকে যথেষ্ট জোরে না মারার জন্য। এবং মুসলিম ছাত্রটি এক নাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছে। (পিপলস রিপোর্টার এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি)।
এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই শিক্ষিকাকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, শশী থারুর, আসাদুদ্দিন ওয়াইসি সহ একাধিক রাজনীতিবিদ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মুজাফফরনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ মাল্লাপ্পা বাঙ্গারি জানিয়েছেন, শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
নির্যাতিত শিশুটিকে ও তার বাবা-মাকে শিশু কল্যাণ কমিটি কাউন্সেলিং করেছে। শিশুটির বাবা জানিয়েছেন, “আমার ছেলের বয়স ৭ বছর। এই ঘটনাটি ২৪ আগস্ট ঘটেছিল। শিক্ষিকা ছাত্রদের আমার সন্তানকে বারবার মারতে বাধ্য করেছেন। আমার ছেলেকে এক থেকে দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়েছিল। সে ভয় পেয়ে রয়েছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন