মণিপুরের জাতিদাঙ্গার সময় প্রায় ১২,৬০০ মানুষ রাজ্য ছেড়ে মিজোরামে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। যারা এই মুহূর্তে মিজোরামের ৩৮টি ত্রাণ শিবিরে আছেন। মিজোরাম সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে কিছু জানানো হয়নি। মিজোরাম সরকারের এক আধিকারিক একথা জানিয়েছেন।
মিজোরামের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ লালেংমাইয়া জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা মে মাসে কেন্দ্রের কাছে বাস্তুচ্যুতদের ত্রাণের জন্য ১০ কোটি টাকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন।
রবিবার সংবাদমাধ্যমে লালেংমাইয়া জানান, আমরা এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। রাজ্য সরকারের নিজেদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মণিপুরের বাস্তুচ্যুত মানুষদের সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও জানান, কেন্দ্র থেকে মণিপুরের বাস্তুচ্যুত মানুষের ত্রাণের জন্য আর্থিক সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এঁরা গত ৩মে মণিপুরে জাতিদাঙ্গা শুরু হবার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে আছেন।
লালেংমাইয়া জানিয়েছেন, মিজোরাম সরকার এই ত্রাণ শিবিরের খরচ চালানোর জন্য জন্য অর্থ বরাদ্দ করা ছাড়াও, সরকারি কর্মচারী, বিধায়ক সহ অন্যান্যদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়েছে। আমরা এই অর্থ সংগ্রহ সম্পূর্ণ করেছি যদিও এখনও পর্যন্ত কত অর্থ সংগৃহীত হয়েছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট পাইনি।
মিজোরামের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত শুক্রবার পর্যন্ত মণিপুর থেকে মোট ১২,৬১১ জন শরণার্থী মিজোরামের বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪,৪০০ জন কোলাসিব জেলায়, ৪,২৬৫ জন আইজল জেলায় এবং ২,৯৫১ জন সাইতুয়াল জেলায় আশ্রয় নিয়েছেন। বাকী ৯৫৫ জন চাম্পাই, মামিট, সিয়াহা, লাংতলাই, লুংলেই, খাওয়াজল, সারছিপ এবং হাহথিয়াল জেলায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মিজোরামের আইজল, কোলাসিব এবং সাইতুয়ালে মোট ৩৮টি ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। রাজ্য সরকার, বিভিন্ন এনজিও, স্থানীয় গির্জা এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা এঁদের জন্য খাবারের এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করছেন।
গত ৩মে থেকে মণিপুরে জাতিদাঙ্গা শুরু হয়। ওইদিন মেইতেইদের তফশিলি উপজাতির (এসটি) স্বীকৃতির বিরোধিতা করে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’-এর ডাক দেওয়া হয়। এরপরেই মণিপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জাতিদাঙ্গা শুরু হয়। যে দাঙ্গায় কমপক্ষে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষের জেরে রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন