গোরুর মাংস নিয়ে যাচ্ছেন সন্দেহে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের বেধড়ক মারে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। গুরুতর আহত অবস্থায় ওপর ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শনিবার এই ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাসিকে। সোমবার মহারাষ্ট্র পুলিশের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার ২৪ জুন নাসির শেখ এবং আফান আবদুল মজিদ আনসারি নামের দুই ব্যক্তি গাড়ি করে মুম্বাই যাচ্ছিলেন। রাস্তায় সিন্নার ঘটি জাতীয় সড়কের কাছে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের এক দল তাঁদের গাড়ি থামায় এবং গাড়ি তল্লাশি করতে শুরু করে।
অভিযোগ, গাড়িতে তল্লাশির সময় স্বঘোষিত গোরক্ষকদের দল কিছু মাংস পায়। এরপরেই জনা পনেরো যুবকের ওই দল গাড়ির আরোহী দুই যুবককে লোহার রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধোর শুরু করে।
বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় এবং সেখানেই ৩২ বছর বয়সী আফান আবদুল মজিদ আনসারির মৃত্যু হয়। জানা গেছে তিনি মুম্বাইয়ের কুরলা অঞ্চলের কুরেশি নগরের বাসিন্দা। এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যার মামলা রুজু করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ঘটনায় দশ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। দ্য স্ক্রল-এর রিপোর্ট অনুসারে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন রাষ্ট্রীয় বজরঙ দল-এর সদস্য।
ঘটনায় গুরুতর আহত নাসির শেখ পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁরা যখন সিন্নার শহরে টোল গেটের কাছে পৌঁছান তখন তাঁদের আটক করা হয় এবং গাড়ি তল্লাশির পর মারধোর করতে শুরু করে।
এর আগে নাসিকেই অন্য এক ঘটনায় স্বঘোষিত গোরক্ষকরা লুকমান আনসারি নামক এক ব্যক্তিকে গোরুর মাংস নিয়ে যাবার অভিযোগে হত্যা করে। গত ৮ জুন লুকমান আন্সারি, আকিল গাভান্দি এবং পাপ্পুর পাড্ডি একটি গাড়িতে করে গোরুর মাংস নিয়ে যাবার সময় নাসিকের ইগাতপুরি অঞ্চলে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের হাতে আটক হয়। আকিল গাভান্দি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকি দুই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধোর করা হয় এবং যে ঘটনায় লুকমান আনসারির মৃত্যু হয়।
গত মার্চ মাসে বিহারের সারণে একই ধরণের এক ঘটনায় নাসিম কুরেশি নামক ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে মারধর করে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের একটি দল। সেক্ষেত্রেও আহত ব্যক্তি গোরুর মাংস নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনায় সুশীল সিং, রবি শাহ এবং উজ্জ্বল শর্মা নামে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন