সামনেই গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধাসভা নির্বাচন। তার আগে (১ আগস্ট থেকে ২৯ অক্টবরের মধ্যে) ১ কোটি টাকার ১০,০০০ নির্বাচনী বন্ড ছাপিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবং তা বিক্রিও হয়েছে ১-১০ অক্টোবরের মধ্যে। গত শনিবার, দুটি RTI- এর উত্তরে এই তথ্য জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)।
২৯ অক্টোবর, RTI কর্মী কানহাইয়া কুমারকে SBI-এর জানিয়েছে, ২০১৯ সালে, নাসিকের ইন্ডিয়া সিকিউরিটি প্রেস (India Security Press) থেকে মোট ১১,৪০০ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মূল্যের (১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার) নির্বাচনী বন্ড আছে।
SBI আরও জানিয়েছে, চলতি বছর সরকার আবার ১ কোটি টাকা মূল্যের ১০,০০০ টি নতুন করে নির্বাচনী বন্ড ছাপিয়েছে। যেখানে, গত জুলাই মাসের পরে সরকারের ঘরে ১ কোটি টাকার ৫,০৬৮ টি নির্বাচনী বন্ড অবিক্রিত অবস্থায় রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রথম নির্বাচনী বন্ড চালু করে মোদী সরকার। তারপর থেকে ২৪,৬৫০ টি ১ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড ছাপিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে ১০,১০৮ টি বিক্রি হয়েছে SBI-এর মাধ্যমে। তবে, এই পরিসংখ্যানে নতুন ১ কোটি টাকার ১০,০০০ নির্বাচনী বন্ডের তথ্য সংযোজিত হয়নি।
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে দ্বিতীয় RTI করেছিলেন লোকেশ বাত্রা (Lokesh Batra) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত নৌ সেনা অফিসার। তাঁর প্রশ্নের উত্তরে- গত ১৯ আগস্ট, ইন্ডিয়া সিকিউরিটি প্রেস (India Security Press)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার মোট ৬,৬৪,২৫০ টি নির্বাচনী বন্ড ছাপানোর জন্য ১.৮৫ কোটি টাকা খরচ করেছে।
আর, এই তথ্য সামনে আসর পর সোমবার, গুজরাটের দলীয় সভা থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিশানা করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট। অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘বিজেপির আচরণে গণতন্ত্রাতিক ব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে। নির্বাচনী বন্ডের সাহায্যে বিধায়ক কিনে একের পর এক সরকার ফেলে দিচ্ছে।’
নির্বাচনী বন্ড আসলে কি?
সুদ বিহীন এই বন্ড আসলে- প্রমিসরি নোট (Promissory Note) বা ডিমান্ড ড্রাফট (Demand Draft)-এর মতো। এই বন্ডগুলি বিভিন্ন মূল্যে পাওয়া যায়, যেমন ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার।
যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এই বন্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক (SBI) থেকে কিনে চাঁদা হিসাবে তা রাজনৈতিক দলগুলিকে দিতে পারেন। পরে সেই বন্ডগুলি ভাঙিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে, আশ্চর্যের বিষয়- এই নির্বাচনী বন্ডগুলি (চাঁদা হিসাবে) কারা দিয়েছে, তা প্রকাশ করতে হয় না রাজনৈতিক দলগুলিকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে (লোকসভা ভোটের আগে) বিজেপির মোট আয় ছিল প্রায় ২,৩৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬১ শতাংশ, অর্থাৎ— প্রায় ১,৪৫০ কোটি টাকাই এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে।
ওই একই বছরে, কংগ্রেসের মোট আয় ছিল ৫৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৯ শতাংশ, অর্থাৎ— প্রায় ৩৮৩ কোটি টাকা এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন