দেশের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর অজুহাত দিয়ে ভারতের বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার, এই অভিযোগ করেই বৃহস্পতিবার বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করলেন জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। দেশের বিজ্ঞানীদের গবেষণার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ অর্থ আটকে দেওয়া হয়েছে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার টুইট করে খাড়গে জানিয়েছেন, “দেশের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অজুহাত তুলে মোদী সরকার ভারতের বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক কাজকে সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করে দিতে চায়। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত দেশের শীর্ষস্থানীয় গবেষণা সংস্থাগুলিকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ অর্থ দেওয়া হয়নি। যার ফলে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের ব্যক্তিগত কষ্টার্জিত জমানো টাকা খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন।”
কেন্দ্রকে কটাক্ষ এদিন কংগ্রেস সভাপতি আরও জানিয়েছেন, একটা সময় কেন্দ্রীয় সরকার দেশের গবেষকদের জন্য আরও অর্থ সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এন আর এফ) তৈরি করেছিল। কিন্তু তাঁদের কাজের জন্যও গত তিনমাস ধরে কোনও টাকাপয়সা দেওয়া হয়নি।
বর্ষীয়ান কং নেতার আরও বক্তব্য, “বেসরকারি অনুদান অবশ্যই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু তার জন্য সরকারি অর্থ সাহায্য বন্ধ করা উচিত নয়। ২০২৩ সালের বাজেটে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ এক ধাক্কায় ৬.৮৭ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থ সাহায্যে কাটছাঁট ও কেন্দ্রীয় সরকারের বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতি এই মিথ্যা সমর্থনের জন্যই ২০১৭ সালে একবার ভারতের গবেষকরা গোটা দেশ জুড়ে প্রায় ২৭টি শহরে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে আবার এই সরকার গবেষণার কাজে যুক্ত দেশের বিভিন্ন সংস্থাকে ‘সেলফ ফাইন্যান্সিং’ প্রজেক্ট শুরু করতে বলেছিল। তার মানে এই যে, গবেষণা করার জন্য নাকি সংস্থাগুলিকে নিজেদেরই অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।”
এই নিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করে খাড়গে বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন ‘জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান, কিন্তু তাঁর সরকার মনে মনে প্রার্থনা করেন ‘পরাজয় বিজ্ঞান, পরাজয় অনুসন্ধান’।”
যদিও শুধু খাড়গেই নন, বৃহস্পতিবার এই একই বিষয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন জাতীয় কংগ্রেসের আরও এক বর্ষীয়ান নেতা পি চিদাম্বরমও। তিনি জানিয়েছেন, “এক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের শীর্ষ গবেষণা সংস্থাগুলি চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনওরকম অর্থ সাহায্য পায়নি। যার ফলে গত তিনমাস ধরে বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রকল্প আটকে রয়েছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন