ছয় মাস আগে ৪১ টি অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিকে ৭ টি আলাদা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। আর এই সময়কালে ৭ টির মধ্যে ৬ টি সংস্থা যে তথ্য নথিভুক্ত করেছে, তাতে টার্ণওভারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার, এমনই দাবি করেছে মোদী সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, যন্ত্র ইন্ডিয়া লিমিটেড (YIL) ব্যাতীত সব সংস্থায় অস্থায়ী লাভের কথা জানিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে- মিউনিশন ইন্ডিয়া লিমিটেড (MIL), আর্মার্ড ভেহিকেলস নিগম লিমিটেড (AVANI), অ্যাডভান্সড ওয়েপনস অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড (AWE India), ট্রুপ কমফোর্টস লিমিটেড (TCL), ইন্ডিয়া অপটেল লিমিটেড (IOL) এবং গ্লাইডার্স ইন্ডিয়া লিমিটেড (GIL)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, এই সংস্থাগুলি যথাক্রমে ৩ হাজার কোটি এবং ৬০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের অভ্যন্তরীণ চুক্তি এবং রপ্তানি আদেশগুলি কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ পর্যন্ত গোলাবারুদ রপ্তানির সবচেয়ে বড় ৫০০ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছে মিউনিশন ইন্ডিয়া লিমিটেড (MIL)। এই সংস্থাগুলির স্বয়ং সম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি সহযোগিতামূলক প্রচেস্টার মাধ্যমে নতুন পণ্য তৈরি করছে। ভারতীয় রেলের এক্সেলের জন্য প্রায় ২৫১ কোটি টাকার বরাত পেয়েছে যন্ত্র ইন্ডিয়া লিমিটেড (YIL)।’
তবে, কেন্দ্রের এই বিবৃতিকে ‘অতিপ্রচার’ বলে সমালোচনা করেছে বিভিন্ন কর্মচারী ইউনিয়ন। যারা ২৫০ বছরের পুরনো অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড (OFB) ভাঙার জন্য কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছিল। এদিন তারা দাবি করেছে, সরকার অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড ভাঙার সাফল্য তুলে ধরতে যে গল্প প্রচার করছে, তা আগামীতে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির বেসরকারিকরণের পথ প্রশস্ত করবে।
২৩ মে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে কর্মচারীদের ইউনিয়ন। তাতে ইউনিয়ন জোর দিয়ে বলেছে, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড কখনই লোকসানকারী পাবলিক সংস্থা ছিল না। সেই বোর্ড ভেঙে নতুন করে সাতটি আলাদা সংস্থা গড়া নিয়ে নিজেদের সফলতা তুলে ধরতে তথ্য বিকৃতি করেছে সরকার।
কর্মচারীদের ইউনিয়ন আরও দাবি করেছে, ‘’তথ্য বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের উদ্বৃত্ত আয় ছিল ৩৪২ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬৪ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। ২০১৮ সাল নাগাদ কোনও লোকসান ছিল না অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের।‘’
একই সঙ্গে ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়েছে, '‘অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড (OFB) এর গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিভাগ এবং সাঁজোয়া যানবাহন বিভাগের আয় সর্বদা উদ্বৃত্ত ছিল। তবে, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মহামারী করোনার জেরে যে প্রভাব পড়েছিল, সেই সময়কার অবস্থাকে OFB-র প্রকৃত ক্ষমতা হিসাবে দেখলে চলবে না।‘'
গত বছর অক্টোবরে, কেন্দ্রীয় সরকার ‘ডিফেন্স পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং’ (DPSU) গঠন করে। এর মধ্যেই ৭ টি সংস্থা আলাদাভাবে কাজ করছে। তা নিয়েও মুখ খুলেছেন এআইডিইএফ-এর সাধারণ সম্পাদক সি শ্রীকুমার। তিনি অভিযোগ করেছেন, ''ডিপিএসইউ-তে কর্মরত কর্মীদের "মনোবল ভেঙে দিয়েছে মোদী সরকার।''
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন