“বৈচিত্র্যকে স্বীকার করুন, মিলেমিশে থাকুন, অন্যদের শ্রদ্ধা করুন”। নাগপুরে আরএসএস-এর এক অনুষ্ঠানে সোমবার একথা বলেছেন সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হবার পর মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে তিনি যেভাবে তাঁর বক্তব্যে বিজেপির নাম না করে মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন তাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, নাম না উচ্চারণ করে তিনি বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীকে সতর্ক করেছেন।
গতকাল নিজের ভাষণে ভাগবত বলেন, “একবছর হয়ে গেল মণিপুর এখনও শান্তির জন্য অপেক্ষা করছে। গত ১০ বছর ধরে মণিপুর শান্তই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সেখানে বন্দুক সংস্কৃতির পুনর্জন্ম হয়েছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রথম মণিপুরের এই সমস্যা সমাধান করা দরকার।”
সোমবারের বক্তব্যে আরএসএস প্রধান নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন কোনও যুদ্ধ নয়। গণতন্ত্রের এক অপরিহার্য প্রক্রিয়া। স্বভাবতই সেখানে দুই পক্ষ থাকবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কিন্তু তার মধ্যেও মর্যাদা থাকা উচিত। কখনও মিথ্যা বলা উচিত নয়। দেশ চালানোর জন্য মানুষকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানো হয়।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যেভাবে ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে উভয় পক্ষই একে অপরকে অন্যায়ভাবে আক্রমণ করেছে, যেভাবে তারা প্রচার কৌশলের প্রভাবকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছে যা পুরো বিষয়টিকে বিভাজনের দিকে নিয়ে গেছে। এর ফলে সামাজিক এবং মানসিক বিভেদ-রেখা বাড়বে এবং বহু সময় অকারণে আরএসএস-এর মতো সংগঠনকে অকারণে, অপ্রয়োজনীয়ভাবে টেনে আনা হয়েছে।”
নির্বাচনের প্রচারপর্বে যেভাবে মিথ্যার ব্যবহার করা হয়েছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমান প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এবার মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মর্যাদা বজায় রেখে কাজ করাই আমাদের সংস্কৃতি। যে ব্যক্তি অহংকার না করে কর্ম সম্পাদন করে তাঁকেই প্রকৃত সেবক বলা যায়। সকলকে সঙ্গে নিয়ে সহমত পোষণ করেই আমাদের এগোতে হবে।
মনে করা হচ্ছে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে যেভাবে নরেন্দ্র মোদির ভাষণে মুসলিমদের সম্পর্কে স্পষ্টভাবে সাম্প্রদায়িক এবং ঘৃণ্য বিবৃতি উঠে এসেছিল সেই প্রসঙ্গ মনে রেখেই মোহন ভাগবত এই ধরণের মন্তব্য করেছেন। মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারীর মতো নাম দিয়ে ডাকা হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল কংগ্রেস হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র চুরি করে মুসলমানদের দেবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন