গুজরাটের কচ্ছ উপকূলের আদানি গোষ্ঠীর মুন্দ্রা বন্দর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫.৩ কেজির হেরোইন। এই বিপুল পরিমাণ মাদকের আনুমানিক মূল্য ৩৭৬.৫ কোটি টাকা।
গুজরাট ক্রমশই দেশের 'গেটওয়ে অব ড্রাগস' হয়ে উঠছে, অথচ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নীরব রয়েছেন বলে আগেই অভিযোগ করেছিল কংগ্রেস। মঙ্গলবার ফের গুজরাটের কচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হওয়ার পর সেই তকমাই কী তাহলে আরও জোরালো হচ্ছে? পাঞ্জাব পুলিশের থেকে খবর পাওয়ার পরই গুজরাট পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা মঙ্গলবার এত বিপুল পরিমাণ হেরোইন উদ্ধার করেছে।
এ প্রসঙ্গে গুজরাট পুলিশের ডিজি আশিস ভাটিয়া জানিয়েছেন, মুন্দ্রা বন্দরে জামাকাপড়ের কন্টেনারে হেরোইন রাখা ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। সেই কন্টেনারগুলি এসেছিল সংযুক্ত আরব আমীরশাহী থেকে। সেগুলি পাঞ্জাবে যাওয়ার কথা ছিল। আড়াই মাস আগে কাপড়ের কন্টেনারে হেরোইন এসেছে বলে পাঞ্জাব পুলিশই গুজরাট এটিএস-কে খবর দিয়েছিল। সেই খবর পাওয়া মাত্রই এ বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছিল গুজরাট পুলিশ। গুজরাট পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরকে নিয়ে এটিএস-র একটি টিম মুন্দ্রা বন্দরে পৌঁছায়। বন্দরের কন্টেনার ফ্রেইট স্টেশনের কাছে তাঁরা সন্দেহজনক ওই কন্টেনারের খোঁজ পায়।
সূত্রের খবর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর আজমান ফ্রী জোন থেকে ১৩ মে কন্টেনারটি মুন্দ্রা বন্দরে এসেছিল। ঠিকমতো তল্লাশি চালিয়ে দেখা গেছে, কন্টেনারের মধ্যে ৫৪০টি কাপড়ের রোল রয়েছে। তার ৬৪ টার মধ্যেই হেরোইন পাউডার পাওয়া গেছে। এমনভাবে কাপড়ের ভাঁজে সেই পাউডার কার্বন টেপ ব্যবহার করে রাখা হয়েছিল যাতে তা এক্স-রেতেও ধরা না পড়ে।
গুজরাট পুলিশের ডিজি জানিয়েছে যে, এখনও পর্যন্ত মাদক পাচারকাণ্ডে কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি। কন্টেনারটি পাঞ্জাবে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর গ্রিন ফরেস্ট জেনারেল ট্রেডিং এটা পাঠিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের এক ডেলিভারি এজেন্ট জোভিয়াল কন্টেনার লাইন্সের কাছে ওই কন্টেনার এসেছিল। গান্ধীনগরেও এই জোভিয়াল কন্টেনারের অফিস আছে।
মুন্দ্রা বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত কেন নেওয়া হয়নি প্রশ্নের জবাবে গুজরাট পুলিশ প্রধান ভাটিয়া জানান, কোনও একটা বন্দরের দিকে আঙুল তোলা উচিত না। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, "মাদক বিক্রেতারা ভারতে মাদক পাঠানোর জন্য উপযুক্ত যেকোনো চ্যানেল ব্যবহার করবে। শুধু মুন্দ্রা নয়, আমরা অতীতে গুজরাটের অন্যান্য বন্দর যেমন কান্ডলা এবং পিপাভাভ থেকেও মাদক উদ্ধার করেছি। মহারাষ্ট্রের নভ শেভা বন্দর থেকেও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি চেন্নাই এবং পশ্চিমবঙ্গেও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদানির তত্ত্বাবধানে থাকা মুন্দ্রা বন্দর থেকে ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স দুটি কন্টেনার উদ্ধার করেছিল। যা থেকে প্রায় ৩০০০ কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল। যা মূলত আফগানিস্তানে উদ্ভূত এবং বিশ্বের বাজারে এর মূল্য ছিল প্রায় ২১০০০ কোটি টাকা। গত মে মাসেও মুন্দ্রা বন্দর থেকে ৫২ কেজি কোকেন পাওয়া গিয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন