উচ্ছেদ অভিযানের নামে যোগীরাজ্যে চলছে তান্ডব। মা ও মেয়েকে কুঁড়েঘরে বন্ধ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুর দেহাত জেলার একটি গ্রামে।
সূত্রের খবর, নিহতেরা হলেন ৪৫ বছর বয়সী প্রমিলা দীক্ষিত ও তাঁর ২১ বছর বয়সী মেয়ে নেহা দীক্ষিত। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগে পুলিশ-প্রশাসনের ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, স্টেশন হাউস অফিসার এবং একজন বুলডোজার অপারেটর। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা এবং স্বেচ্ছায় আঘাত করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে রুরা এলাকার মাদাউলি গ্রামে। সেখানে একটি সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিল পুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং রাজস্ব আধিকারিকরা। যদিও স্থানীয়রা বলছেন, যোগী সরকারের তরফে কোনও আগাম নোটিশ দেওয়া হয়নি।
এরপরই আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠে। মৃতা প্রমীলা দীক্ষিতের ছেলে শিবম দীক্ষিত অভিযোগ করেন, 'বাড়ির ভিতরে থাকাকালীনই তারা (প্রশাসনের কর্তারা) আগুন লাগিয়ে দেয়। তবে, আমি পালাতে সক্ষম হয়েছিলাম। তারা আমাদের মন্দির ভেঙে দিয়েছে।'
তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'পুলিশ-প্রশাসন কেউ কিছুই করেনি, এমনকি ডিএম (জেলা ম্যাজিস্ট্রেট)ও নয়। কেউ আমার মাকে বাঁচাতে যাননি, সবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন।' সাফ কথায় পুলিশ দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে।
পুলিশের এহেন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। প্রমিলা ও নেহার মৃত্যুর জেরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়েছে তাঁরা বলে পাল্টা অভিযোগ।
যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তাঁরা (পুলিশ) দাবি করেছে, প্রমিলা দীক্ষিত এবং তাঁর মেয়ে নেহা নিজেরাই নিজেদের গায়ে আগুন লাগিয়েছেন।
পুলিশ সুপার (এসপি) বিবিজিটিএস মূর্তি দাবি বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি, এক মহিলা ও তাঁর মেয়ে কুঁড়েঘরের ভিতরে নিজেদের তালাবদ্ধ করে আগুন লাগিয়েছিলেন, যার ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সমস্ত কর্মকর্তাও গিয়েছেন। আমরা তদন্ত করব। যদি কোন অন্যায় হয়ে থাকে, আমরা দোষীদের রেহাই দেব না।'
এদিকে, এই ঘটনায় সরব হয়েছে সমাজবাদী পার্টি। অভিযোগ করা হয়েছে, 'বুলডোজারকে অবৈধ ক্ষমতা দেখানোর প্রতীক বানিয়ে ফেলেছে বিজেপি।'
হিন্দিতে এক টুইট বার্তায় অখিলেশ যাদবের দল জানিয়েছে, 'যোগী (আদিত্যনাথ) সরকারের আমলে ব্রাহ্মণ পরিবারগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে। একই ধরণের ঘটনা বারে বারে ঘটছে। শুধু দলিত এবং অনগ্রসর শ্রেনী নয়, যোগী সরকারের নৃশংসতা থেকে ব্রাহ্মণরাও রক্ষা পাচ্ছেন না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন