সংসদে বিক্ষোভের ঘটনায় ধৃতদের মধ্যে নীলম দেবী নামের এক মহিলাও রয়েছেন। এম.ফিল ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও এখনও কোনও চাকরি পাননি তিনি। দীর্ঘ বেকারত্বের জ্বালা থেকে হতাশায় ভুগছেন তিনি। এমনটাই দাবি করেছে নীলমের পরিবার।
মেয়ের গ্রেফতারির পর সাংবাদিকদের সামনে নীলমের মা সরস্বতী বলেন, "আমার মেয়ে উচ্চশিক্ষিত, কিন্তু চাকরি পাচ্ছিল না। এই কারণে ও এতটাই হতাশায় ছিল যে প্রায়ই বলত আমার মরে যাওয়া উচিত কারণ এত পড়াশোনা করেও আমি দুবেলা খাওয়ার মতো রোজগার করতে পারি না।“
নীলমের ভাই রমনিবাস সাংবাদিকদের বলেন, তাদের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পারেন তিনি। ওই আত্মীয় নীলমকে টিভিতে দেখে তাদের ফোন করে জানান ঘটনাটি।
রামবিলাস জানিয়েছেন, “নীলম হিসারে পড়াশোনা করে। ও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। মাত্র দুদিন আগে বাড়িতে এসেছে। বিএ, এমএ, এম ফিল ডিগ্রি রয়েছে ওর। নেট পাশ করেছে, কিন্তু এখনও কোনও চাকরি পায়নি। কেন ও এমনটা করেছে তা আমরা জানি না। আমরা ওর সঙ্গে দেখা করার পরই এই বিষয়ে জানতে পারব। আমরা আমাদের এক ভাইয়ের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরেছি, তিনি আমাদের ফোন করেছিলেন।“
রামনিবাস জানিয়েছেন, নীলম প্রায়ই দেশে বেকারত্বের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সরব হতেন। তিন কালা কৃষি বিল বাতিলের দাবিতে দিল্লিতে এক বছর ধরে হওয়া কৃষকদের বিক্ষোভেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
নীলম হিসারে চাকরি পেতে ব্যর্থ হওয়ায় সেকেন্ডারি টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্টের প্রস্তুতির জন্য হরিয়ানার জিন্দে চলে গিয়েছিল বলে জানায় তার পরিবার।
বুধবার দুপুরে গ্যালারি থেকে সংসদের নিম্নকক্ষে আচমকা লাফিয়ে পড়েন মনোরঞ্জন ডি এবং সাগর শর্মা নামের দুই যুবক। এরপর ক্যানিস্টার থেকে হলুদ ধোঁয়া স্প্রে করতে শুরু করেন। এইসময় বাইরেও নীলম আজাদ এবং অমল শিন্ডে নামের দুজন হলুদ ধোঁয়া স্প্রে করতে করতে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই চারজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের জেরা করে বুধবার রাতে হরিয়ানা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পঞ্চম অভিযুক্ত বিশাল শর্মাকে। এদের সকলের বিরুদ্ধেই ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা মনোরঞ্জনের বাড়ি কর্ণাটকের মাইসুরে। রিক্সাচালক সাগর শর্মার বাড়ি লখনউতে। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এদের যোগাযোগ হয়। কর্ণাটকের মাইশুরের সাংসদ প্রতাপ সিমহা এদের সংসদে প্রবেশের জন্য পাস দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন