নাগাল্যান্ডের মন জেলায় ১৪ জন গ্রামবাসীর নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজ্য ছাড়িয়ে প্রতিবাদের আগুন দেখা গেল কোহিমাতেও। টানা তিনদিন ধরে নাগাল্যান্ডে প্রতিবাদ চলছে। বৃহস্পতিবার মন জেলায় বনধ হয়, শুক্রবার নাগাল্যান্ডের মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নামে।
রাজধানী কোহিমার পাশাপাশি কিফিরে, তুয়েনসাং, নোকলাক এবং লংলেং-এ প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে। প্রতিবাদে পা মিলিয়ে রাজধানীজুড়ে মিছিলের ডাক দেয় নাগা স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এনএসএফ)। তাতে শামিল হওয়া হাজার হাজার মানুষের একটাই বক্তব্য ছিল, বিতর্কিত আফস্পা প্রত্যাহার করতে হবে। প্ল্যাকার্ড, ব্যানারে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আফস্পার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
কিছু প্ল্যাকার্ডে লেখা হয়েছে, ‘আর কতবার বুলেটের জোরে আফস্পাকে বোঝানো হবে।’ কোথাও লেখা হয়, ‘আফস্পা হল ভারতীয় সেনার শয়তানের চেহারা।’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা নয়, আফস্পাকে খর্ব করুন।’ মন জেলা থেকে শুরু হয়ে আন্দোলন দ্রুতগতিতে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কেন্দ্রের তিন কৃষক বিরোধী আইনের প্রতিবাদে যেভাবে কৃষকরা শামিল হয়েছিলেন, টানা এক বছর ধরে আন্দোলন চালিয়েছেন এবং শেষপর্যন্ত কেন্দ্র বাধ্য হয়েছে সেই আইন প্রত্যাহার করে নিতে। একইভাবে লাগাতার আন্দোলনের জেরে নাগাল্যান্ডে আফস্পা প্রত্যাহার করা হবে।
রাজ্যের পূর্ব প্রান্তের সব জেলার দোকানপাট এদিন বন্ধ ছিল। বিক্ষুব্ধদের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত সেনাদের গ্রেফতার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নাগাল্যান্ডের ১৪ জন গ্রামবাসীর সেনাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় গোটা দেশে শোরগোল পড়ে যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনা কথা স্বীকার করলেও সেনাবাহিনীর দোষ স্বীকার করতে চাননি। তা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়।
তারপর নাগাল্যান্ড পুলিশ যে রিপোর্ট দেয়, তার সঙ্গে কেন্দ্রের রিপোর্ট সম্পূর্ণ আলাদা হয়। তারপর থেকেই সেখানকার কনিয়াক গোষ্ঠী দাবি জানায় যে, সে রাজ্যে সেনাবাহিনীর কোনও পদক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন