নাগাল্যান্ডে গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাফাই ছিল, গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও খনি শ্রমিকরা দাঁড়াননি। তাই তাঁদের গুলি করা হয়েছে। নাগাল্যান্ড পুলিশের তদন্তে এবার উঠে এল এক অন্য তথ্য। যেখানে সেনা গুলি চালায়, সেখানে কোনও চেকপোস্টই ছিল না। সুতরাং গাড়ি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার ব্যাপারই নেই।
এছাড়া শ্রমিকদের গাড়ির সামনে থেকে গুলি করা হয়েছিল। যদি গাড়ি তাড়া করা হত, তাহলে গুলি লাগত পিছন দিক থেকে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনী নাগাল্যান্ডে অভিযানে গিয়েছিল। তাদের ছিল অসমের গাড়ি। শুধু তাই নয়, তাঁরা নম্বর প্লেটে পাল্টে নিয়েছিল। কিন্তু তারা নম্বর প্লেট কেন পাল্টাল, তার জবাব এখনও মেলেনি।
অন্যদিকে, সেনা জওয়ানদের গুলিতে নিহতদের পোশাক বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, এমন অভিযোগও উঠছে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ, গুলির শব্দ শুনে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, সেনা জওয়ানরা কয়েক জন নিহতের পোশাক বদলে ফেলেছে।
নাগাল্যান্ড পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও সেনাবাহিনীর বক্তব্যের উল্টো ছবি ধরা পড়ল। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামবাসীর তরফে কোনও আক্রমণ ঘটেনি। সেনার দাবি ছিল, বিশ্বস্ত সূত্রে জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়েই ওটিং গ্রামে কমান্ডোরা অভিযান চালান।
এদিকে, নাগাল্যান্ডের ডিজিপি জন লংকুমার ও নাগাল্যান্ডের কমিশনার রোভিলাউও মোর ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সংগ্রহ করেন। তাঁদের দেওয়া রিপোর্ট বলছে, কমান্ডোরা গ্রামবাসীর পরিচয় জানার চেষ্টাই করেনি। এলোপাথাড়ি গুলি করে মেরেছে তাঁদের। জঙ্গি গতিবিধির কোনও খবরই ছিল না ওই এলাকায়।
নাগাল্যান্ডের ঘটনার পর অমিত শাহ ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করলেও সংসদে তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষে কথা বলেছিলেন। তারপর নাগাল্যান্ড পুলিশের এই রিপোর্ট ঘটনায় অন্য মাত্রা যোগ করল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন