গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেত্রী মায়া কোডনানি, বজরং দলের প্রাক্তন নেতা বাবু বজরঙ্গি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা জয়দীপ প্যাটেল সহ প্রায় ৭০ জন অভিযুক্তকে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার সময় হওয়া নারোদা গাম মামলায় বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল আদালত।
২০০২ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সবরমতি এক্সপ্রেসে আগুন লাগার পরের দিন আহমেদাবাদের নারোদা গামে মুসলিম মহল্লায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহমেদাবাদের এক বিশেষ আদালত আজ এই হিংসার মামলায় রায় দিয়েছে। মামলাটি গুজরাটের নয়টি বড় দাঙ্গার মধ্যে একটি।
মায়া কোডনানি এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত। ২০০২ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকারের একজন মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কোডনানির পক্ষে ডিফেন্স উইটনেস হিসেবে আদালতে হাজির হন।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়, যার মধ্যে খুন, খুনের চেষ্টা, ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা, ডাকাতি, সাম্প্রদায়িক বৈষম্য প্রচার করা, আগুন লাগানো, প্রমাণ লোপাট করা, প্ররোচনা, ধর্মীয় অনুভূতিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত ইত্যাদি রয়েছে।
২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার মামলাগুলির দ্রুত বিচারের জন্য মনোনীত আদালতগুলির উপর সুপ্রিম কোর্টের নজরদারি সত্ত্বেও, নারোদা গাম মামলার রায় ঘোষণা করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগল।
প্রায় ১৮২ জন সাক্ষীর বয়ান শোনার পর ৫ এপ্রিল মামলাটির বিচার শেষ হয়। মোট অভিযুক্ত ছিল ৮৬ জন। মামলা চলাকালীন ১৭ জনের মৃত্যু হয়। বাকি ৬৯ জনকে আজ বেকসুর খালাস করা হয়।
নির্যাতিতদের আইনজীবী সামশাদ পাঠান সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে গুজরাট হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করবেন।
মায়া কোডনানি এবং বাবু বজরঙ্গিকে অবশ্য নারোদা পাটিয়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই মামলায় ৯৭ জনকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ২৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। পরে অবশ্য গুজরাত হাইকোর্ট থেকে কোডনানি মুক্তি পান। যদিও বজরঙ্গির সাজা বহাল রাখে হাইকোর্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন