টানা ৩ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরও কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে আবার তলব করেছে ইডি। আগামী ২৫ জুলাই, আবার সোনিয়াকে হাজিরা দিতে হবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED অফিসে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড আর্থিক দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ডেকে পাঠিয়েছিলেন ED অফিসারেরা। সেইমতো, ছেলে রাহুল গান্ধী এবং মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রাকে নিয়ে দুপুর ১২.১০ নাগাদ ED অফিসে আসেন সোনিয়া গান্ধী। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যান রাহুল গান্ধী।
এরপর, বিকাল ৩.৪৫ মিনিট নাগাদ ED অফিস ছাড়েন প্রিয়াঙ্কা সহ সোনিয়া গান্ধী। মূলত, সোনিয়া গান্ধীর অসুস্থতার জন্য প্রিয়াঙ্কাকে সঙ্গে থাকার অনুমতি দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এদিন সোনিয়া গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ED-র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মনিকা শর্মা (Monika Sharma) নেতৃত্বাধীন একটি দল। সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহ আগে রাহুল গান্ধীকে যে প্রশ্নমালা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ED, সেই একই সেট এদিন সোনিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। আর্থিক তছরুপ মামলায় গান্ধীদের বয়ান রেকর্ড করা হবে।
অন্যদিকে, সোনিয়া গান্ধীকে এই ইডির তলবের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আটক হয়েছেন কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, কংগ্রেস নেতা আজয় মাকেন, কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, জয়রাম রমেশ, সচিন পাইলট।
কর্ণাটকে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে, কংগ্রেস কর্মীরা ED অফিসের কাছে পার্ক করা একটি গাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় বেঙ্গালুরুর শান্তিনগর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
কংগ্রেস কর্মীরা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ডি.কে. শিবকুমার বলেন, 'কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর তদন্তের ভিডিও রেকর্ডিং বিজেপিকে দেখাতে দিন।' তিনি আরও বলেন, 'বিক্ষোভ সংগঠিত করে, আমরা দেশের জনগণের সামনে তুলে ধরেছি- কীভাবে শাসক বিজেপি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।'
এই ইস্যুতে আগেই মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি। তিনি মিডিয়াকে বলেন যে, মানি লন্ডারিং বা অর্থপাচারের কোনও প্রমাণ নেই গান্ধীদের বিরুদ্ধে। সিংভি আরও জানান, 'কেন্দ্রীয় সরকার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়াতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অপব্যবহার করছে। এটি মানি লন্ডারিংয়ের কেস যেখানে কোনও অর্থ জড়িত নেই। মামলাটি কার্ডের প্যাকেটের চেয়েও বেশি ফাঁপা। তবে আমরা এটির মুখোমুখি হব। আমরা ভয় পাই না।'
কংগ্রেসের অভিযোগ, মুদ্রাস্ফীতির মত একটি বাস্তব সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এইসব কাজ করছে। মিঃ সিংভি জানান, ২০১৫ সালে ইডির তরফে এই মামলাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরিয়ে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়ে আসার পর পুনরায় এই মামলাটি চালু করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন