রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস সংস্থা ওএনজিসিকে চিঠি পাঠিয়ে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়ে দিল যে, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি তুলে দিতে হবে বিদেশি হাতে। এই তালিকায় আছে দেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী ভাসাই খনি, মুম্বাই হাই, অশোকনগর ব্লকও। এর আগে এপ্রিলে একবার চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ওএনজিসি চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুভাষ কুমারকে পাঠানো চিঠিতে ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ বিদেশি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা বলেছে কেন্দ্র।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের যুক্তি, তৈলকূপ থেকে উৎপাদন কমে গিয়েছে। অভ্যন্তরীণ জোগানের জন্য উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। পাইপলাইন বা প্ল্যাটফর্মের মত উত্তোলক পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা ঠিক করার দায়িত্ব প্রয়োজন। প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে ওএনজিসির পক্ষে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মন্ত্রকের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ শাখা ডিরেক্টর জেনারেল অফ হাইড্রোকার্বনস ১৫টি কূপের তালিকা পাঠিয়েছিল ওএনজিসিকে। ওই কূপগুলিতে সঞ্চিত তেলের পরিমাণ ৭৯১.২ মিলিয়ন টন ও গ্যাস ৩৩.৫৬ বিলিয়ন ঘন মিটার আয়তনের।
গত ২৮ অক্টোবরের চিঠিতে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে উত্তোলনের হারে ঘাটতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভাসাই কূপে গ্যাসের উত্তোলন ৪৫ থেকে ৭০ শতাংশ করা সম্ভব। মুম্বাই কুপের উত্তোলন ২৮ থেকে ৩২ শতাংশ করা উচিত। খনন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অমরনাথ জানান, অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে সুযোগ দিয়ে ডেকে আনা উচিত।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মুম্বাই হাই, ভাসাই, কৃষ্ণা-গোদাবরী বেচে দিলে ওএনজিসির হাতে বলার মত কিছু থাকবে না। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বেসরকারিকরণের অজুহাত বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ। ওএনজিসিকে ঘাটতির জন্য দোষ দিয়ে লাভ নেই। আন্তর্জাতিক সংস্থা এলেও খুব লাভ হবে, তা নয়। অশোক নগরে যেখানে মাত্র কয়েকদিন আগে কাজ শুরু হল, সেখানকার যন্ত্রপাতি পুরনো হয় কী করে। উঠছে প্রশ্ন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন