'ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত'। রাজ্যের অর্থ-ব্যবস্থার উন্নতির পরিপেক্ষিতে 'চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল' করেছে ওড়িশা সরকার (Odisha Govt.)। শুধু তাই নয়, বর্তমানে রাজ্যজুড়ে যে ৫৭ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী আছে, তাঁদেরও স্থায়ী ভাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবীন পট্টনায়ক (Naveen Patnaik) সরকার।
জানা যাচ্ছে, ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন প্রায় ৫৭ হাজার কর্মচারী। শনিবার, তাঁদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে স্থায়ীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রিসভা। এজন্য, রাজ্য কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ১,৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে সরকারের।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উন্নতির প্রেক্ষিতে চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার, সন্ধায় তিনি বলেন, 'আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে, স্থায়ীভাবে চুক্তিমূলক নিয়োগ ব্যবস্থা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। আজও অনেক রাজ্যে নিয়মিত নিয়োগ হচ্ছে না। এবং তারা এখনও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ওড়িশায়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের যুগ শেষ হয়ে গেছে।'
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আগামীকাল (রবিবার) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। উপকৃত হবেন ৫৭ হাজারেরও বেশি মানুষ (পরিবার)। এ জন্য সরকার প্রতিবছর প্রায় ১,৩০০ কোটি টাকা খরচ করবে।'
তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগে ওড়িশা যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তা বর্ণনা করে এদিন পট্টনায়েক বলেন, 'সুপার সাইক্লোন পরবর্তী পরিস্থিতি এবং চরম আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠা আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। দেনা করে রাজ্য চলছিল। কর্মচারীদের মজুরি এবং অন্যান্য কাজের জন্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল হতে হয়েছিল সরকারকে।'
তিনি জানান, 'এটি সত্যিই ওড়িশার অর্থনীতির জন্য একটি কালো সময় ছিল। রাজ্যের কোষাগার শূন্য ছিল। আর্থিক ক্ষেত্রে আমাদের প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, সেচসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। তখন আমাদের অগ্রাধিকার ছিল, সীমিত সম্পদের মধ্যে এই সমস্ত সেক্টরে উন্নয়ন ঘটানো।'
এদিন, পট্টনায়েক বলেন, সরকারি নিয়োগ বন্ধ করা এবং সরকারি পদ বাতিল করা তাঁর কাছে বেদনাদায়ক ছিল।
তিনি বলেন, '২০১৩ সালে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শুরু হয়। এটাও আমার জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। এখন, আমাদের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ওড়িশা নিজের নতুন একটি পরিচয় তৈরি করেছে। এমতাবস্থায়, গত বছর থেকে আমরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পদগুলিতে স্থায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন