কথা মতো 'হাইড্রোজেন বোমা' ফেললেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক। কিন্তু তাঁর এই হাইড্রোজেন বোমাকে তীব্র কটাক্ষ করলো বিজেপি। তাদের কথায়, বোমা তো দূর, এটা ফুলঝুরিও নয়।
গতকালই মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের বিরুদ্ধে হাইড্রোজেন বোমা ফেলবেন তিনি। সেইমতো আজ তিনি জানিয়েছেন, আন্ডারওয়ার্ল্ড নেতাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের এবং মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জাল নোট র্যাকেট কান্ডে অভিযুক্তদের রক্ষা করেছিলেন তিনি, যার তদন্ত করেছিলেন এনসিবি আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ে।
নবাব মালিক বলেন, "আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে সম্পর্কযুক্ত লোকেদের বিভিন্ন বোর্ডের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করেছেন আপনি (দেবেন্দ্র ফড়নবিশ)। মুন্না যাদবকে নির্মাণ শ্রমিক বোর্ডের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করেননি আপনি? হায়দার আজমকে মৌলানা আজাদ ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের সভাপতি করেছেন আপনি। ২০১৬ সালে যখন ডিমনিটাইজেশন ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন কালো টাকা, নকল টাকা, সন্ত্রাসকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ। ১৪.৫৬ কোটি টাকা জাল নোট উদ্ধার হয়েছিল সেই সময়। কিন্তু ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্তও জাল নোট নিয়ে কোনো মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি, কারণ ফড়নবিশের অধীনে জাল নোটের কারবারীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যদি কেউ ধরা পড়ে যেত এবং বিষয়টি হাতের বাইরে চলে গেলে তাকে কংগ্রেসের লোক বলে চালানোর পরিকল্পনা ছিল।"
তাঁর অভিযোগ, মুম্বাই থেকে একজন এবং পুনে থেকে আর একজন সেইসময় জাল নোট সহ ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু এনআইএ-র হাতে তাদের তোলা তো দূরের কথা, মামলাটি একটুকুও এগোয়নি। ধৃতদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে (সেইসময় রাজস্ব দফতরের আধিকারিক ছিলেন ওয়াংখেড়ে) এবং দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মিলে বিষয়টির মিটিয়ে নিয়েছিলেন।
গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রিয়াজ ভাটিকে ফড়নবিশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে, যা নিয়ে এদিন ফড়নবিশকে আক্রমণ করেছেন নবাব মালিক।
নবাব মালিকের এই অভিযোগের কিছুক্ষণ পরই তাঁকে পাল্টা আঘাত করেছেন বিজেপি নেতা আশিষ শেলার। তিনি বলেন, যারা হাইড্রোজেন বোমা ফেলবেন বলে দাবি করেছিলেন তাঁরা ফুলঝুরিও ফাটাতে পারলেন না। উনি স্পষ্টতই অবসাদগ্রস্থ, ওনার অক্সিজেনের প্রয়োজন। প্রচন্ড প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ফড়নবিশের মানহানি করতে পারেননি তিনি। হ্যাঁ, মুন্না যাদব, হাজি আরাফত, হায়দার আজম আমাদের দলের কর্মী কিন্তু আরাফত এবং আজমের বিরুদ্ধে একটিও অভিযোগ নেই। যাচাই-বাছাইয়ের পরই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে।" রিয়াজ ভাটির সাথেও দেবেন্দ্র ফড়নবিশের যোগাযোগের অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন তিনি।
দেবেন্দ্র ফড়নবিশও নিজের ট্যুইটারে জর্জ বার্নার্ড শ-র একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করে মালিককে কটাক্ষ করেছেন। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, "আমি অনেক আগেই শিখেছি, কখনোই শূকরের সাথে কুস্তি লড়তে যেও না। এতে তুমিই নোংরা হবে। যদিও শূকর এটা পছন্দ করে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন