খানিক অন্তর্বর্তী বিরতির পর আবার ফিরল ইন্ডিয়া বনাম ভারত বিতর্ক। এবার সরাসরি দেশ জুড়ে সমস্ত ক্লাসের স্কুল পাঠ্যপুস্তকে ‘ইন্ডিয়া’ নাম সরিয়ে কেবলমাত্র ‘ভারত’ নামটিকেই স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করল কেন্দ্র। সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, পাঠ্যপুস্তকে ইন্ডিয়া-এর বদলে দেশের নাম শুধুমাত্র ‘ভারত’ রাখার NCERT-এর বিশেষ প্যানেলের সুপারিশ গ্রহণ করেছে NCERT।
বুধবার এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়েকমাস আগেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্ত জাতীয় শিক্ষা অনুসন্ধান ও প্রশিক্ষণ পরিষদ (NCERT)-এর বিশেষ একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ওই সংস্থাকে সমস্ত পাঠ্যবই থেকে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি মুছে দিয়ে শুধুমাত্র ‘ভারত’ নামটি রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল। বুধবার কমিটির সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে NCERT। কমিটির চেয়ারপার্সন সি আই আইজ্যাক এই নিয়ে জানিয়েছেন, “পাঠ্যবই থেকে দেশের নাম হিসেবে ইন্ডিয়া’কে সরিয়ে ভারত নামটি রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, প্রাচীন ইতহাসের বদলে নয়া সিলেবাসে ক্ল্যাসিকাল ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার জন্যও আবেদন করা হয়েছে।"
আরেক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম PTI-কে আইজ্যাক জানিয়েছেন, “ইন্ডিয়া শব্দটি আসলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধের পর থেকেই ব্যবহার হতে শুরু করে। কিন্তু ভারত নামটি প্রায় ৭ হাজার বছর পুরনো, বিষ্ণু পুরানের মতো পৌরাণিক গ্রন্থেও এর উল্লেখ করা রয়েছে।" তবে NCERT-এর চেয়ারম্যান দীনেশ সাকলানি জানিয়েছেন, "বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করা হলেও এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।"
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে জি-২০ সম্মেলনের আসা দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রনেতাদের নৈশভোজে নিমন্ত্রণ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূর পাঠানো আমন্ত্রণপত্র থেকেই শুরু হয় এই বিবাদ। সাধারণত, ভারতের রাষ্ট্রপতির চিঠিতে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’। কিন্তু ওই নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। সেখান থেকেই দেশের নামবদল নিয়ে শুরু হয় চরম বিতর্ক। সূত্রে খবর, এবার সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সংবিধানে দেশের ‘আদি’ নাম সংশোধন করার তোড়জোড় করছে বিজেপি সরকার।
উল্লেখ্য, এর আগে একাধিকবার পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু পরিবর্তন করেছে NCERT, যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। ‘ইচ্ছামত’ ও ‘অযৌক্তিক’ ভাবে বিষয়বস্তু বাদ দেবার প্রতিবাদে এনসিইআরটি-র নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের মুখ্য উপদেষ্টা কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন সুহাস পালসিকার এবং যোগেন্দ্র যাদব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন