বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদের দাপট দেখাতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে পারস্পরিক দোষারোপের জেরে। তাৎপর্যের বিষয়, কংগ্রেসের বৈঠকে তৃণমূল না থাকলেও যারা যোগ দিচ্ছেন, তারা প্রত্যেকেই বিরোধী জোটেরই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ফলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে যে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূল বন্ধু হারাচ্ছে কিনা। বিরোধিতায় সঙ্গে আছে, কিন্তু কোনও পার্টি চালিত বিরোধিতায় নেই তৃণমূল। জানিয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। আর এখানেই বাকি দলগুলির সঙ্গে মতবিরোধ চলছে তাদের।
সাম্প্রতিক হিসেব নিকেশ বলছে, কয়েকদিন আগে মুম্বই সফরে গিয়ে মমতা দেখা করেন শরদ পাওয়ারের সঙ্গে। সেদিনই তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকে দিল্লিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই বৈঠকে ছিল না তৃণমূল। তৃণমূল সেই বৈঠক বয়কট করে। মঙ্গলবার রাতে মমতা উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরে ও শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে দেখা করেন মুম্বইতে। ওইদিনই খাড়গের বৈঠকে ছিলেন সেনার প্রতিনিধি।
আসলে প্রথা অনুযায়ী, সবথেকে বড় বিরোধী দল থেকে বাছা হয় বিরোধী দলনেতাকে। এ ক্ষেত্রে যেমন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে। আর তাঁর বৈঠকে বিরোধী দলগুলি যাবে, সেটাই রাজনীতির ট্র্যাডিশন।
১২ জন সাংসদদের সাসপেনশনে বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে, সংসদের প্রথম দিন প্রধান বিরোধী দল গুলি ওয়াক আউট করলেও, ঘাসফুল সাংসদরা প্রায় একাই বসে থাকে বিরোধী বেঞ্চে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর ইউপিএ নেই মন্তব্য বিরোধীরা ভালো ভাবে নেন নি। কংগ্রেসের পক্ষেও শালীনতা বজায় রাখার কারণ মেলেনি।
তবে তৃণমূলের দাবি, তারা ইস্যুকে সামনে রেখে কাজ করতে চায়, দলকে নয়। দলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েছেন, বিরোধিতার জন্য কোনও ইস্যুতে তাঁরা অবশ্যই বিরোধিতা করবেন, কিন্তু কোনও বিশেষ দলের ডাকে বিরোধিতা করবেন না। ফলে তৃণমূলের বন্ধু হারানোর বিষয়টি থেকেই যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন