কুখ্যাত সোনা পাচার মামলার প্রধান অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ RSS-সমর্থিত এনজিও HRDS India-তে যোগ দিলেন। শুক্রবার এনজিওর ডিরেক্টর-কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটিস পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি।
কেরলের ইদুক্কি জেলার থুদুপুঝহাতে এনজিওর অফিসে এসে দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বপ্না সুরেশ বলেন, এটি তাঁর কাছে জীবিকা নির্বাহের নতুন উপায় হতে চলেছে। এই কাজের মাধ্যমে তাঁকে কেন্দ্র করে থাকা বিতর্কগুলোকে দূরে ঠেলে দিতে চান তিনি।
কেরল ছাড়াও তামিলনাড়ু, গুজরাট, ত্রিপুরা, আসাম এবং ঝাড়খণ্ডে HRDS এনজিওর কার্যক্রম রয়েছে। মূলত ট্রাইবাল পপুলেশন নিয়ে কাজ করে এই এনজিও। এদের মূল অফিস রয়েছে নতুন দিল্লিতে। স্বপ্না সুরেশ নতুন দিল্লির কর্পোরেট অফিস থেকে সমস্ত কাজ পরিচালনা করবেন বলে এনজিও মারফত জানা গেছে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সোনা পাচারের অভিযোগে প্রাক্তন UAE কনস্যুলেট স্বপ্না সুরেশকে গ্রেফতার করে এনআইএ। অভিযোগ, আরব থেকে কেরলে ৩০ কেজি সোনা পাচার করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এই কান্ডে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নাম জড়ান তিনি। গত বছর মার্চ মাসে আবগারি দপ্তরের কমিশনার সুমিত কুমার কেরল হাইকোর্টে বিবৃতি দিয়ে জানান, জেরার মুখে স্বপ্না সুরেশ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের অনুরোধে রাজ্যে বিদেশি মুদ্রা পাচার করেছেন তিনি।
যদিও এর কয়েকদিন পরে ওই মাসেই পিনারাই বিজয়নের নামে মিথ্যা অভিযোগ করায় ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফাআইআর দায়ের করে কেরল পুলিশ। এফআইআরে বলা হয়, সোনা পাচার কান্ডের তদন্ত করার সময় গত বছর ১২ ও ১৩ আগস্ট স্বপ্না সুরেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডি আধিকারিকরা। জাল সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছিলেন আধিকারিকরা।
কয়েক মাস আগে ভাইরাল হওয়া একটি ভয়েস ক্লিপের ভিত্তিতে এই অভিযোগ দায়ের করেছিল পুলিশ। ভয়েস ক্লিপে থাকা মহিলা কন্ঠস্বরটি স্বপ্না সুরেশের বলে অনুমান করা হয়। ক্লিপে দাবি করা হয়, ইডির কিছু কর্মকর্তা গত বছরের আগস্টে কোচির এজেন্সি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাঁকে বাধ্য করেছিলেন। তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। পরে দু'জন মহিলা পুলিশ, যাঁরা ইডি কর্তৃক সুরেশকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর সাথে ছিলেন, তাঁরাও জানিয়েছেন, বিজয়নের নাম বলার জন্য স্বপ্না সুরেশকে চাপ দিচ্ছিলেন ইডির আধিকারিকরা। এই অডিও ক্লিপ নিয়ে তদন্ত শুরু করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ক্রাইম ব্রাঞ্চের রিপোর্টের ভিত্তিতে ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে কেরল পুলিশ। উল্লেখ্য, প্রায় ১৬ মাস জেলে থাকার পর গত বছর নভেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পান স্বপ্না সুরেশ।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন