“মুসলিম ও যাদব জনগোষ্ঠীর থেকে কোনো ভোট পাইনি। ওঁদের হয়ে কোনো কাজ করব না।“ বিহারের সীতামারী কেন্দ্রের জেডিইউ সাংসদ দেবেশচন্দ্র ঠাকুর সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক দাবি করেন। সদ্য নির্বাচিত সাংসদের এই মন্তব্যে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধীরা তো আক্রমণ করেছেই, এমনকি তাঁর দলও তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি।
সীতামারীতে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় দেবেশচন্দ্র ঠাকুর বলেন, "আমাকে মুসলিম এবং যাদব জনগোষ্ঠী ভোট দেয়নি। আমার কাছে ওঁরা আসতে পারেন, আমি স্বাগত জানাব। চা, জলখাবার খেতে পারেন। কিন্তু আমার কাছ থেকে কোনও সহায়তা প্রত্যাশা করবেন না।" উল্লেখ্য, সীতামারী কেন্দ্রে আরজেডি প্রার্থী তথা যাদব জনগোষ্ঠীর নেতা অর্জুন রাইকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন দেবেশচন্দ্র ঠাকুর।
পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়েও তিনি জানান তিনি নিজের মন্তব্যে অনড় থাকবেন। তিনি বলেন, “আমি যা বলেছি তাতেই অটল থাকব। আমি কিছু সময়ের জন্য এটা বলছি। বিগত ২৫ বছর ধরে কোনো বৈষম্য ছাড়াই মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।“ তবে মুসলিম ও যাদবরা তাঁকে ভোট দেননি, কিভাবে তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন, এর কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
দেবেশচন্দ্র ঠাকুরের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, আরজেডি মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, “আমরা ঠাকুরের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। তাঁর বক্তব্য অবমাননাজনক। জাতিভেদ ও ধর্মবিরোধী। এটা ঠাকুরের সামন্তবাদী মনোভাবেরই প্রকাশ ঘটাচ্ছে।"
দেবেশচন্দ্র ঠাকুরের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন তাঁর নিজের দলের সাংসদই। বিহারের বাঙ্কারের জেডিইউ সাংসদ গিরিধারী যাদব বলেছেন, "আমি ঠাকুরের বক্তব্যের নিন্দা জানাই। তাঁকে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।"
দেবেশচন্দ্র ঠাকুর এক সময় বিহার বিধান পরিষদের অধ্যক্ষ ছিলেন। চলতি লোকসভা নির্বাচনে জেডিইউ –এর প্রতীকে সীতামারী থেকে প্রার্থী হন তিনি। সেখানে আরজেডি প্রার্থী তথা যাদব জনগোষ্ঠীর নেতা অর্জুন রাইকে পরাজিত করেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন