সংসদে কেন্দ্র দাবি করেছে, ম্যানহোলে নেমে বা বর্জ্য পরিষ্কার করতে গিয়ে দেশে কোনও সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে কোনও রিপোর্ট নেই সরকারের কাছে।
গত মঙ্গলবার, সংসদে সামাজিক ন্যায় ও সশক্তিকরণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে (Ramdas Athawale) বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে দেশে কোনও অস্বাস্থ্যকর সেপটিক ট্যাঙ্ক (latrine) পাওয়া যায়নি, যার কারণে কোনও সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।'
কিন্তু, সরকারি রিপোর্টেই প্রকাশ, গত পাঁচ বছরে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ৩৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এই মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। যোগী রাজ্যে এ কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন সাফাই কর্মী।
তারপরে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কার করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটেছে ৪৩ জনের। দিল্লিতে ৪২ জনের, মহারাষ্ট্রে ৩০ জনের, হরিয়ানায় ৩৬ জনের, গুজরাটে ২৮ এবং পাঞ্জাবে ১৪ জনের। এছাড়া, নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার সময় চণ্ডীগড়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এই খবরের সুত্র ধরে, মোদী সরকারকে বিঁধেছেন সিপিআই(এম)-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechury)।
টুইটারে তিনি লেখেন, 'আবার মিথ্যাচার! সংসদে মোদী সরকার বলেছে, দেশে কোনও বিপজ্জনক সেফটি ট্যাঙ্ক বা নর্দমা নেই। আর এই অচ্যুত কাজের কারণে কোনও মৃত্যু ঘটেনি।! কিন্তু আবার সরকারই স্বীকার করেছে যে, গত ৫ বছরে বিপজ্জনক নর্দমা ও সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ৩৩০ জন মানুষ মারা গেছেন!
প্রসঙ্গত, মানুষ নামিয়ে বা হাত দিয়ে বড় বড় নর্দমা, ম্যানহোল, বা সেপ্টিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার প্রথা দেশে আইন করে বন্ধ করা হয়েছে। ম্যানুয়াল ষ্ক্যাভেন্জারস আইন ২০১৩ অনুযায়ী, সাফাইকর্মী নিয়োগ করাও বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে শহরাঞ্চলে মানুষ নামিয়ে সাফাই কাজ এখনও জারি আছে। সাধারণত দলিত শ্রেণির লোকদের দিয়ে এই কাজ করানো হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন