মেয়েদের ধর্ষণের দায় পুলিশ বা প্রশাসনের নয়, তাদের বাবা-মায়ের। রাত হয়ে গেলে তাদের বেরোনোর কোনও প্রয়োজন নেই। ঘটনায় দোষ পরিবারেরই। গোয়া মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের এই ধরনের মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই আবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দুই নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে সাওয়ান্ত বিধানসভায় বলেছেন, রাত হয়ে গেলে মেয়েদের বাইরে থাকার প্রয়োজন কী? তিনি আদতে অপরাধের দায়ে আক্রান্তের উপর চাপিয়ে অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
রবিবার গোয়ার রাজধানী পানাজি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণের বেনোলিম বিচে দুই নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, কয়েকজন বন্ধু মিলে তারা সেখানে যায়। বন্ধুদের গ্রুপে ছিল দুই নাবালিকাও। তাদের মধ্যে ছয়জন বন্ধু চলে যায়। থেকে যায় চারজন। অপরাধীরা পুলিশের বেশে ছিল বলে জানিয়েছে নির্যাতিতারা। তাদের কাছ থেকে সব জিনিসপত্র ছিনতাই করে নেয় বলে অভিযোগ। কোলভা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম আসিফ হাতেলি, রাজেশ মানে, জানন চিনচাঞ্চকর এবং নীতিন ইয়াববেল। ধৃতদের একজন সরকারি কর্মী। তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। অপরাধী ও আক্রান্ত সবাই গোয়ার নাগরিক। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিচ এবং তথাকথিত একান্তে সময় কাটানোর জায়গাগুলিতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হবে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর দায় এড়ানো মন্তব্য থেকে স্পষ্ট তিনি মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে তাঁর কাছ থেকে এধরনের জবাবে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, উন্নাও, হাতরাসের ঘটনার ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে, দোষীদের শাস্তি দেওয়ার বদলে নির্যাতিতাকে দোষী হিসেবে তুলে ধরতে ব্যস্ত বিজেপি।
বিরোধী দল কংগ্রেস নেতার আল্টন ডিকোস্টার বক্তব্য, রাতে বেরোতে গেলে নাগরিকরা ভয় কেন পাবেন। ফরওয়ার্ড পার্টির বিধায়ক অজয় সরদেশাইয়ের বক্তব্য, নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকার ও পুলিশের। সেও দায়িত্ব যদি পালন করতে না পারে, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন