চার ধাম মন্দিরের রাস্তায় যেন কোনো অহিন্দু না থাকেন। সমগ্র চার ধাম এলাকা থেকে অহিন্দুদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। এই মর্মে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিকে চিঠি লিখলেন হরিদ্বারের একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শংকরাচার্য পরিষদের প্রধান আনন্দ স্বরূপ।
তার থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হিন্দুত্ববাদী নেতার এই দাবি পূরণের জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
গত ১৭ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী ধামীকে চিঠি লেখেন আনন্দ স্বরূপ। চিঠিটি মিডিয়ার হতে আসে বুধবার। চিঠিতে লেখা রয়েছে, কর্মসংস্থান ও ব্যবসার অজুহাতে অ-হিন্দুরা হিন্দুদের পবিত্র জায়গাগুলিতে পাকাপাকিভাবে থেকে যাচ্ছে। সরকারের উচিত চার ধাম মন্দিরগুলির রাস্তায় এঁদের যাবতীয় ব্যবসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা। শুধু তাই নয়, মন্দিরের আশেপাশে মুসলিম সহ অ-হিন্দুদের আনাগোনা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হোক। এছাড়াও চার ধাম অঞ্চলে কোনো অ হিন্দু যাতে জমি বা বাড়ি কিনতে না পারে, সরকারকে তাও নিশ্চিত করতে হবে।
আনন্দ স্বরূপের এই চিঠির পরই মুখ্যমন্ত্রী ধামী প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, এবার গোটা রাজ্যেই যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। শান্তি ভঙ্গকারীরা যাতে রাজ্যে ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করা হবে।
আগামী মে মাসের প্রথম থেকেই গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ - এই চার মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন তীর্থ যাত্রীরা। এই চার মন্দিরের উদ্দেশ্যে দর্শনার্থীদের যাত্রা 'চার ধাম যাত্রা' নামে পরিচিত। প্রতিবারই চার ধাম যাত্রার সময় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অসংখ্য গরীব মানুষ মন্দিরের সামনে পসরা সাজিয়ে বসেন কিছু আয় করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট এবার আর কোনো অ-হিন্দু দোকানদার ব্যবসা করতে পারবেন না।
এই প্রসঙ্গে এক নিউজ পোর্টালে আনন্দ স্বরূপ জানিয়েছেন, "অ-হিন্দুরা যদি ব্যবসায়ী সেজে চার ধাম মন্দিরে হামলা চালায় তখন কি হবে? চার ধাম মন্দিরে অ হিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আমাকে। তবে সরকার যদি তা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে কালী সেনা এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠন পথে নেমে তা করাবে।"
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে হরিদ্বারে হওয়া ধর্ম সংসদে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার ডাক দিয়েছিলেন হিন্দুত্ববাদী নেতারা। সেখানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এই আনন্দ স্বরূপ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন