মারাঠা সংরক্ষণ আন্দোলন নিয়ে একেবারে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে। এবার সংরক্ষণ নিয়ে সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে পথে নামলেন রাজ্যের একগুচ্ছ বিধায়ক। মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের মন্ত্রণালয়ের বাইরে পথ অবরোধে বসেছেন সমস্ত দলের প্রায় দুই ডজন বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক মন্ত্রী-সাংসদও। সংরক্ষণ নিয়ে সরকারের কাছে পদত্যাগেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, গত ৯ দিন ধরে ফের অনশনে বসেছেন মারাঠা সংরক্ষণের অন্যতম প্রধান নেতা মনোজ জারাঙ্গে পাতিল।
শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে মারাঠাদের ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়ার দাবিতে গত আগস্ট থেকেই ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেছেন মনোজ পাতিল। সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে তাঁর সঙ্গে কথা বলে সংরক্ষণ কার্যকর করার আশ্বাস দেন। দু’পক্ষের সহমতে ৪০ দিনের সময় দেওয়া হয় সরকারকে। কিন্তু ২৪ অক্টোবর সেই সময়ও পেরিয়ে যাওয়ায় রাজ্য জুড়ে ফের আন্দোলনের ঝড় উঠেছে।
রাজ্যের বিভিন্ন রাস্তা ও রেলপথ অবরোধ করে একাধিক শহরের জনজীবন কার্যত স্তব্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু গাড়ি-বাসে। এমনকি বীড় জেলায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি বিধায়ক প্রকাশ সোলাঙ্কের বাড়ি। শুধু তাই নয়, সংরক্ষণের দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আত্মঘাতীও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। উন্মত্ত জনতা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে রাজ্যের একাধিক এনসিপি ও বিজেপি কার্যালয়েও।
রাজ্যের ‘ট্রিপল ইঞ্জিন’ সরকারের তরফে বীড় জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়া রুখতে ও রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার অজুহাতে ছত্রপতি শম্ভাজিনগর জেলায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
এদিকে, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আরও একবার সরকারের বিরুদ্ধে অনশনে বসেছেন মনোজ পাতিল। মঙ্গলবার তিনি রাজ্যের শিন্ডে সরকারকে হুমকির সুরে জানান, “বিশেষ অধিবেশন বসিয়ে অবিলম্বে মারাঠা সংরক্ষণ কার্যকর না করা হলে, আমি জলপানও বন্ধ করে দেব। তখন আমার কিছু হলে তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য সরকার।”
এদিন মনোজের সমর্থনে একজোটে পথ অবরোধে বসেন রাজ্যের বিভিন্ন দলের বিধায়করা। মুম্বইয়ের নরিমান পয়েন্টে রাজ্য সরকারের সদর দফতরের সামনে এদিন সকালে ‘এক মারাঠা, লাখ মারাঠা’ এবং ‘ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ কি জয়’ স্লোগান তুলে পথে বসে পড়েন বিধায়করা। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে সকালের ট্রাফিক চলাচলে। পরে তাঁদের আটক করে আজাদ ময়দান থানায় তুলে নিয়ে যায় মুম্বই পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন