সম্প্রতি, তথ্য প্রযুক্তি বিধি (২০২১)-তে সংশোধনী এনেছে কেন্দ্র। কোন খবরটি ‘ভুয়ো’, আর কোনটি ‘ভুয়ো’ নয় - তা নির্ণয়ের ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে মোদী সরকার। এই নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কপিল সিব্বল।
শনিবার, সিব্বল বলেন, ‘এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কোন খবরটি ‘ভুয়ো? এর পরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করছেন গণতন্ত্র বিপদে নেই!’
বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বলেছেন, ‘একটি ফ্যাক্ট চেক ইউনিট তৈরি করবে সরকার। এই ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সরকার সম্পর্কিত সমস্ত অনলাইন তথ্য পরীক্ষা করবে।‘
তিনি জানান, ‘গুগল, ফেসবুক, টুইটারের মতো ইন্টারনেট সংস্থা যদি সরকারের চিহ্নিত ওই কনটেন্ট সরিয়ে না দেয় তাহলে তারা ‘সুরক্ষা’ পাবে না।‘
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিব্বল বলেন, ‘এখন PIB (প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো’ সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা ভুয়ো (fake) আর কোনটা নয় এবং তা জানিয়ে দেবে। তারপর, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি যদি সেই বক্তব্যকে সরাতে না চাই, তাহলে তারা কেন্দ্রের সুরক্ষা পাবে না।’
রাজ্যসভার সাংসদ সিব্বল বলেন, ‘এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা ভুয়ো খবর আর কোনটা নয়! আর অমিত শাহ জি বলছেন গণতন্ত্র বিপন্ন নয়?’
এর আগে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া (EGI)। এক বিবৃতিতে EGI বলেছে, সোস্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্র সংক্রান্ত কোনও পোস্ট ‘ভুয়ো’ বা ‘মিথ্যা’ বা ‘বিভ্রান্তিকর’ কি না, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চরম ক্ষমতা নিজেই নিজেকে দিল সরকার। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি, সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্টের সত্যতা যাচাই করার সরকারি পদ্ধতি বা কাঠামো কী হবে। এই সবই ন্যায়বিচারের নীতির পরিপন্থী এবং সেন্সরশিপের সমতুল্য। এই সংশোধনী দেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার উপরে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে দানবীয় বিধি আরোপ করা হয়েছে। এখনই, তা প্রত্যাহার করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে সরকারকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন