শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ এবার বিজেপি শাসিত হিমাচল প্রদেশে। প্রায় ২৫০ সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ-দুর্নীতি করেছে হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় (HPU) কর্তৃপক্ষ। তথ্য জানার অধিকার আইনে (RTI) পাওয়া প্রায় ১৬ হাজার পৃষ্ঠার নথি নিয়ে এমনই দাবি করেছে স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SFI)।
বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, মহামারী করোনাকালে অর্থাৎ, গত তিন বছর ধরে এই দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। RTI-এর তথ্য অনুসারে- ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন সিকান্দার কুমার। তাঁর আমলেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC)-এর নিয়ম এবং ‘হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭০’ লঙ্ঘন করে অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যম নিউজক্লিক (News Click)-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই সময়কালে গবেষণা করার মানদণ্ড বিচার না করেই কিছু প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। একইসঙ্গে, তাঁদের গবেষণাপত্র/নিবন্ধ ইউজিসি দ্বারা নির্দিষ্ট জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রার্থীরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা পিএইচডি করার আগের কাজের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। RTI মারফত জানা গেছে, এর মধ্যে একজন প্রার্থী ৭ টি প্রকাশিত গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে ৫ টি গবেষণাপত্র জারনালিজম ও মাস কমিউনিকেশন জারনালে প্রকাশিত হয়েছিল।
একজন প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার আগে UGC-NET পাশ করতে হয়। ২০০৯ সালে, যেসব প্রার্থীরা NET পাস করেননি কিন্তু PhD করেছেন, তাঁদের নিয়োগের জন্য নিয়ম শিথিল করা হয়েছিল।
নিয়ম অনুযায়ী, PhD রেগুলার (নিয়মিত) মোডে করা উচিত। আর, PhD থিসিস সম্পর্কিত জারনালে দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হওয়া উচিত। থিসিস বিষয় সম্পর্কিত কমপক্ষে দুটি সেমিনারে অংশ নেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কোনও অধ্যাপকের মাধ্যমে PhD-র মূল্যায়ন করা উচিত।
কিন্তু, RTI মারফত জানা গেছে, বেশ কয়েকজন প্রার্থী NET ক্লিয়ার করেননি বা PhD-ও করেননি, তারপরেও তাঁদের নির্বাচিত করা হয়েছে।
আশ্চর্যজনকভাবে, কিছু প্রার্থী তাঁদের পূর্ববর্তী চাকরির সময় দীর্ঘকালীন ছুটি কাটান, তবে এই ছুটির সময়কালকে গবেষণা ও শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতার অংশ হিসাবেও বিবেচনা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেনীতে (Economical Weaker Section) সহকারী অধ্যাপক পদের একজন সরকারি কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন