NSE Fraud Case: জালিয়াতি মামলায় ৬ মার্চ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে আনন্দ সুব্রহ্মনিয়ান

চিত্রা রামকৃষ্ণ সুব্রহ্মনিয়ানকে এনএসই-তে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁর কাছে ইমেল আইডি অ্যাক্সেস ছিল বলে জানা গেছে। যে ইমেলগুলি যোগীকে পাঠানো হয়েছিল এবং যার সাথে সমস্ত ক্ল্যাসিফায়েড তথ্য শেয়ার করা হয়েছিল।
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি ছবি সংগৃহীত
Published on

এক বিশেষ আদালত শুক্রবার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) প্রাক্তন প্রধান কৌশলগত উপদেষ্টা আনন্দ সুব্রহ্মনিয়ানকে এনএসই জালিয়াতি মামলায় ৬ মার্চ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা চেন্নাইয়ে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার মধ্যবর্তী রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় এবং সিবিআই তাঁকে আদালতে হাজির করে।

সংস্থা জানিয়েছে, তাঁকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাজেয়াপ্ত নথি সহ মামলার সাথে জড়িত অন্যান্যদের মুখোমুখি হতে হবে। আদালত সিবিআইয়ের শুনানির পর আবেদন মঞ্জুর করে এবং আনন্দকে ৬ মার্চ পর্যন্ত তাদের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি চেন্নাইতে টানা তিন দিন তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছিল। পুরো জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এলোমেলো ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

চিত্রা রামকৃষ্ণ সুব্রামানিয়ানকে এনএসই-তে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁর কাছে ইমেল আইডি অ্যাক্সেস ছিল বলে জানা গেছে। যে ইমেলগুলি যোগীকে পাঠানো হয়েছিল এবং যার সাথে সমস্ত ক্ল্যাসিফায়েড তথ্য শেয়ার করা হয়েছিল।

CBI সম্প্রতি SEBI অফিসে অভিযান চালিয়ে কিছু অপরাধমূলক কাগজপত্র, প্রমাণ এবং ডিজিটাল নথি উদ্ধার করেছে। সূত্র অনুসারে জানা গেছে, "এগুলি গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং প্রমাণ। এর সবগুলোই মামলায় জড়িত আসামিদের মিথ্যাকে সামনে এনেছে। আমরা সমস্ত আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলা করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আমাদের মামলা যখন আদালতে যাবে তখন এই তথ্য প্রসিকিউশনকে প্রমাণ করতে সহায়তা করবে।”

সিবিআই গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন NSE ডিরেক্টর রবি নারায়ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। চিত্রা রামকৃষ্ণের আগে তিনি NSE-এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে বলা হয়েছিল তিনি লন্ডনে পালিয়ে গিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন। কিন্তু সিবিআই সূত্র আইএএনএসকে নিশ্চিত করেছে যে রবি নারায়ণ দিল্লিতে ছিলেন এবং সেখানে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।

সিবিআই সূত্র অনুসারে, "রবিকে তদন্তে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। তিনি আমাদের সমনের জবাব দিয়েছেন। তাঁকে দিল্লির অফিসে ডাকা হয়েছিল এবং সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি মামলার একজন সন্দেহভাজনও।"

জেরার সময় রবিও অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি তাঁর LOC বন্ধ করার অনুরোধও করেছিলেন।

ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন এমডি এবং সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণকে সম্প্রতি মুম্বইতে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি তদন্ত সংস্থার কাছে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করেন।

জানা গেছে, সিবিআই তাঁকে প্রায় ৫০টি প্রশ্ন করেছিল। তিনি অনেক কিছুই জানেন না দাবি করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন। তিনি আরও দাবি করেন যে, তিনি নির্দোষ এবং কেউ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিল, তিনি কতদিন ধরে যোগী বাবাকে মেইল ​​​​পাঠাচ্ছেন? তাঁকে কি ক্ল্যাসিফায়েড তথ্য শেয়ার করার জন্য কোনও কাটমানি দেওয়া হয়েছিল? যদি দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে সেই টাকা তিনি কোথায় বিনিয়োগ করেছেন?

সিবিআই ইতিমধ্যেই চিত্রা, আনন্দ সুব্রামানিয়ান এবং রবির বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি করেছে।

সূত্র আইএএনএসকে জানিয়েছে, চিত্রা এবং এই মামলায় জড়িত অন্য দু'জন বিমানে করে পালিয়ে যাবার ঝুঁকি ছিলো এবং তাই তাদের বিরুদ্ধে এলওসি জারি করা হয়েছে। এই মামলায় এঁদের গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা এখন বেশি।

সিবিআই SEBI-এর ১৯২ পৃষ্ঠার রিপোর্টের ভিত্তিতে চিত্রার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে। যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে হিমালয়ে বসবাসকারী এক যোগীর কাছে সেবির গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও সেই রহস্য পুরুষ যোগীকে এখনও খুঁজে পায়নি সিবিআই। ইতিমধ্যে মামলায় জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এলওসি জারি করা হয়েছে।

১৭ ফেব্রুয়ারি, আয়কর বিভাগ মুম্বাই এবং চেন্নাইতে চিত্রার বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে একাধিক আপত্তিকর নথি উদ্ধার করা হয়েছে। আইটি বিভাগ বিভিন্ন লেনদেন এবং ডিজিটাল রেকর্ড স্ক্যান করে এবং তাঁর কয়েকজন কর্মচারীর বক্তব্যও রেকর্ড করে।

সম্প্রতি সেবি চিত্রাকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। SEBI তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি ১৯২-পৃষ্ঠার আদেশ আপলোড করে কীভাবে চিত্রা তথ্য ফাঁস করে সন্দেহজনক কার্যকলাপে জড়িত ছিল তা বর্ণনা করেছে।

চিত্রা জানিয়েছেন, হিমালয়ে বসবাসকারী একজন ঋষি তাঁকে নির্দেশ দিতেন। তিনি তাঁকে এনএসই সম্পর্কিত ইমেলও পাঠিয়েছিলেন। তিনি ডিসেম্বর ২০১৬ তে SEBI ত্যাগ করেন।

এক সূত্র অনুসারে জানা গেছে, তিনি যোগীর সাথে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতেন। "সাংগঠনিক কাঠামো, লভ্যাংশের পরিস্থিতি, আর্থিক ফলাফল, মানব সম্পদ নীতি এবং সম্পর্কিত সমস্যা, নিয়ন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য তিনি ওই যোগীর সাথে শেয়ার করেছিলেন।" ২০১৪ এবং ২০১৬ এর মধ্যে তিনি rigyajursama@outlook.com এ ইমেল পাঠিয়েছিলেন।

সুব্রাহ্মানিয়ামকে NSE-এর প্রধান কৌশলগত উপদেষ্টা পদে বসানো হয়েছিলো। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। পরে তাঁকে গ্রুপ অপারেটিং অফিসার এবং এমডির উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়। তিনি ২০১৫ এবং ২০১৬-এর মধ্যে এই পদে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সুব্রামনিয়ান, যিনি পূর্বে বাল্মার এবং লরি সংস্থায় মধ্য-স্তরের ব্যবস্থাপক হিসাবে কাজ করতেন। শেয়ারবাজারে তাঁর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তাঁর বেতন বার্ষিক ১৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ১.৬৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। ২০১৭ সালে তার বেতন বার্ষিক ৪.২১ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in