ওড়িশার আদিবাসী আশা কর্মী, মাতিলদা কুল্লু, Forbes India W-Power 2021 তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার বড়গাঁও তহসিলের গড়গাদবাহাল গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী মাতিলদা কুল্লু গত ১৫ বছর ধরে স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে কাজ করছেন। আশা দিদি নামেও পরিচিত তিনি। মহামারীর সময় মাতিলদা কুল্লু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
ফোর্বস ইন্ডিয়ার তালিকাটি সেইসব মহিলাদের জন্য উল্লেখযোগ্য, যারা সামাজিক প্রতিকূলতাকে হারিয়েছেন। মাতিলদা কুল্লু ছাড়াও, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্যও এই তালিকায় রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন আরও ২১ জন মহিলা।
ফোর্বস ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে যে, মাতিলদা কুল্লু প্রতি মাসে ৪৫০০ টাকা উপার্জন করেন। মহামারীর সময় তিনি বড়গাঁও তহসিলের ৯৬৪ জনের যত্ন নিয়েছেন। তাঁর দিন শুরু হয় ভোর ৫টায়। তারপর ঘরের কাজ শেষ করেন এবং পরিবারের চার সদস্যের জন্য রান্না করেন। তারপর কাজে বেরিয়ে পড়েন।
মাতিলদা কুল্লু যখন একজন আশা কর্মী হলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করেন যে গ্রামবাসীরা অসুস্থ হওয়ার পরে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পরিবর্তে 'তান্ত্রিক' (জাদুকরী) কাছে যেতেন। সেই পরিস্থিতি থেকে তিনি গ্রামবাসীদের বের করে আনেন। চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে গ্রামবাসীদের মানসিকতা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন তিনি। গ্রামবাসীরা এখন তান্ত্রিকের কাছে না গিয়ে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
মাতিলদা কুল্লু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য পেতে প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ান। পাশাপাশি, মহিলাদের নবজাতক ও কিশোরী মেয়েদের টিকাদান, প্রসবপূর্ব পরীক্ষা, প্রসবের প্রস্তুতি, গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে স্বাস্থ্য দপ্তর নির্দেশিত পরামর্শ দেন তিনি।
তাঁর কথায় – “আমি খুব খুশি যে আশা দিদিকে এত বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। একজন মহিলা সংসার চালাতে পারেন, তাহলে তিনি কেন সমাজে অবদান রাখতে পারবেন না? একজন মহিলা বাড়ির পাশাপাশি পুরো সমাজের যত্ন নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন