ধর্ষণের শিকার হওয়া এক নাবালিকা গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু অনুমতি দিতে অস্বীকার করে নির্যাতিতাকে মনুস্মৃতির বাণী শোনালেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি।
বুধবার এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি সুধীর দাভে বলেন, মেয়ে এবং ভ্রূণ উভয়ই সুস্থ থাকলে গর্ভপাতের অনুমতি দেবেন না তিনি। এরপরই মনুস্মৃতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া এবং ১৭ বছর বয়সের আগেই সন্তান প্রসব করা স্বাভাবিক ছিল।
নাবালিকার বয়স ১৬ বছর। এই মুহূর্তে ৭ মাসের গর্ভবতী তিনি। তাঁর বাবা গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কারণ গর্ভাবস্থা ২৪ সপ্তাহ অতিক্রম হয়ে গেলে আদালতের অনুমতি ছাড়া গর্ভপাত করা যায় না।
বুধবার নির্যাতিতার আইনজীবী আদালতে জানান, মেয়েটির অল্প বয়সের জন্য তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ন। তাই আদালত যেন দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
এর জবাবে বিচারপতি দাভে বলেন, "আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ আমরা একুশ শতকে বাস করছি। আপনার মা বা ঠাকুমা-দিদাকে জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের দেশে বিয়ের জন্য সর্বোচ্চ বয়স ছিল ১৪-১৫ বছর। ১৭ বছর হওয়ার আগেই মেয়েরা তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম দিতেন। মেয়েরা ছেলেদের আগে ম্যাচুরিটি পায়। যদিও আপনি পড়তে জানেন না, কিন্তু মনুস্মৃতি একবার পড়া উচিত ছিল আপনার।"
বিচারপতি বলেন, "ভ্রূণ বা মেয়ের মধ্যে যদি কোনো গুরুতর অসুস্থতা পাওয়া যায়, তাহলে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি আদালত বিবেচনা করতে পারে। তবে দুজনই যদি সুস্থ থাকে তাহলে আমি গর্ভপাতের অনুমতি দেব না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব এই ধরনের শিশুদের জন্য কোনও সরকারী স্কিম রয়েছে কিনা? অথবা শিশুটিকে যদি কেউ দত্তক নিতে চান, তাঁর খোঁজও করতে পারেন আপনারা।"
রাজকোট সিভিল হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্টকে মেয়েটির শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য একটি প্যানেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দাভে। পাশাপাশি নির্যাতিতার মানসিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে হাসপাতালকে মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন