এনডিএ সরকারের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন’ নিয়ে ফের সরব হল কংগ্রেস। সোমবার এই বিষয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন, বর্তমান সরকার শুধুমাত্র গরম গরম কথা বলে সরকারে টিকে থাকতে চাইছে। গতকাল, রবিবারই সূত্র মারফত জানা গেছিল কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান এনডিএ সরকার তাদের এই মেয়াদেই এক দেশ, এক ভোট নীতি কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। সোমবার কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষ্যে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে।
এদিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন-এর বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও খসড়া প্রস্তাব পেশ করা হয়নি। যদিও সূত্র বলছে, কেন্দ্রের সরকার এই মেয়াদেই এক দেশ এক ভোট-এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায়।
তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, আপনারা বলছেন সূত্র মারফত খবর পেয়েছেন। আমি কংগ্রেসের সরকারি মুখপাত্র হিসেবে বলছি আর কতদিন এই সরকার এই ধরণের কথা বলে টিকে থাকবে? এই সরকার আর কতদিন এই ধরণের সূত্রের ওপর চলবে?
তিনি আরও বলেন, দেশের আসল এবং সত্যিকারের সমস্যা নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার আর কতদিন চোখ বন্ধ করে থাকবে? আর কতদিন জল মাপার জন্য এই সরকার এই ধরণের গরম গরম কথা বাতাসে ভাসিয়ে বেড়াবে? আসল সত্যি হল, এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়নি। বাস্তব হল, এই প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। বাস্তব হল কেন্দ্রের সরকার এই প্রসঙ্গে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। বাস্তব হল এরকম অনেক বিধানসভা আছে যেগুলো এভাবে ভাঙা যায় না।
কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, আমি এখানে শেষ ১০০ দিনে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনার তথ্য তুলে ধরেছি। অথচ, তাতে গুরুত্ব না দিয়ে আপনারা সূত্র ভিত্তিক তথ্যের ওপর আলোচনা চাইছেন। শেষ ১০০ দিনে সরকারও এই ধরণের বহু সূত্র ভিত্তিক তথ্য, হোয়াটস অ্যাপ-এর তথ্য নিয়ে আলোচনা করে টিকে থাকতে চাইছে। এইসব সূত্র ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিহীন আলোচনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। অথচ এগুলো নিয়েই বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে সরকার আর কতদিন টিকে থাকবে?
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম ছিল ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন’। তড়িঘড়ি গত মার্চ মাসে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ-এর সভাপতিত্বে এই বিষয়ক এক কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে লোকসভা এবং সমস্ত বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করা হবে বলে জানানো হয়েছিল এবং পরে ১০০ দিনের মধ্যে সমস্ত পুরসভা, পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যালিটির ভোট করার কথা বলা হয়েছিল।
যদিও কোবিন্দ কমিশন এই বিষয়ে কোনও সময়সীমা নির্ধারিত করেনি। যদিও সূত্র অনুসারে জানা গেছিল, আগামী ২০২৯ থেকে এই নিয়ম চালু করতে চায় কেন্দ্র। কোবিন্দ কমিশনের সুপারিশ নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করে এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবার কথা ছিল।
এক দেশ এক ভোট চালু করতে গেলে সংবিধানে বেশ কিছু সংশোধন আনতে হবে এবং যে জন্য সংসদে বেশ কিছু বিল পাশ করানো আবশ্যক। রামনাথ কোবিন্দের প্যানেলের পক্ষ থেকে এজন্য ১৮টি সাংবিধানিক সংযোজনের কথা জানিয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন