লোকসভা ভোটের মুখে গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লি হাই কোর্ট তাঁকে রক্ষাকবচ দিতে অস্বীকার করার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় কেজরিওয়ালকে। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী মঞ্চ 'ইন্ডিয়া'-র সদস্যরা। আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার পর কিভাবে একটি নির্বাচিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা যায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "একজন ভীত স্বৈরচারী শাসকই মৃত গণতন্ত্র তৈরি করতে চায়। মিডিয়া-সহ সব প্রতিষ্ঠান দখল, দল ভাঙা, বিভিন্ন কোম্পানি থেকে চাঁদা তোলা, প্রধান বিরোধী দলের তহবিল কেড়ে নেওয়া 'শয়তানি শক্তি'র জন্য যথেষ্ট ছিল না, এখন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করাও সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্ডিয়া এর উপযুক্ত জবাব দেবে।"
সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "এটি ইন্ডিয়া ব্লকের দ্বিতীয় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলতি নির্বাচনে জনগণের প্রত্যাখ্যানের ভয়ে মোদী এবং বিজেপি আতঙ্কে রয়েছে। যেসব বিরোধী নেতারা দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁরা সুরক্ষা এবং মদত পাচ্ছেন। তাঁরা সব ‘সত্য হরিশ্চন্দ্র’! এই গ্রেপ্তারগুলি বিজেপিকে হারাতে এবং গণতন্ত্র ও ভারতীয় সংবিধান রক্ষা করতে জনগণের জেদকে আরও মজবুত করবে।"
ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বলেন, "গত ১০ বছরে বিজেপির একজন নেতাও তদন্ত বা গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হননি, যা ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গণতন্ত্রের অবক্ষয়কেই প্রমাণ করে। বিজেপি সরকারের দ্বারা বিরোধী নেতাদের নিরলস নিপীড়ন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অত্যাচার জনগণের ক্ষোভকে আরও প্রজ্বলিত করবে, বিজেপির আসল রঙ উন্মোচন করবে।"
তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লেখেন, "ভোটের আগেই যদি এ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হয়, কী ভাবে নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব? সুপ্রিম কোর্ট এবং নির্বাচন কমিশন যদি এখনই পদক্ষেপ না করে, বিজেপির এই প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কে রুখে দাঁড়াবে?’’
এছাড়াও কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির নিন্দা করে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার সহ একাধিক বিরোধী নেতা। এই গ্রেফতারির প্রতিবাদে আজ দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে আপ। দিল্লিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করেছে পুলিশ। বিজেপির সদর দফতরের সামনে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন