রাষ্ট্র প্ররোচিত হ্যাকারদের দ্বারা আপনার আইফোন হ্যাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে নিজেদের আইফোনে এমনই সতর্কবার্তা আসার দাবি করলেন বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীরা। যদিও কেন্দ্রের তরফ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অ্যাপেল কোম্পানি এরকম ১৫০টি দেশে হ্যাকিং সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিন সকালে আইফোনের পক্ষ থেকে পাঠানো সেই সতর্কবার্তার স্ক্রিনশট প্রথমে শেয়ার করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এরপর আরও অনেক নেতা এই একই দাবি করেন। এই নিয়ে গোটা বিরোধী জোটের তরফে মোদী ব্রিগেড ও আদানি গোষ্ঠীকে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে।
মঙ্গলের সকালে মহুয়া ছাড়াও অ্যাপেলের তরফে ওই সতর্কবার্তা পেয়েছেন শিবসেনা (UBT) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডা, আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং কংগ্রেসের মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান পবন খেরা। বিরোধীদের দাবি, যারা যারা অ্যাপেলের তরফে এই সতর্কবার্তা পেয়েছেন তাঁরা সকলেই মোদী ‘ঘনিষ্ঠ’ আদানি গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করেছেন। আর সেই কারণেই তাঁদের উপর নজরদারি বাড়াতে তাঁদের আইফোন ‘হ্যাক’ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এদিন সকালে এই সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেই বিরোধীরা একজোট হয়ে মোদী সরকার ও আদানি গোষ্ঠীর তীব্র নিন্দা শুরু করেন। সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ওই সতর্কবার্তা পড়ে শোনান। তারপর তিনি বলেন, “বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের যারা যারা এই সতর্কবার্তা পেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে প্রকাশ্যে আদানি গোষ্ঠীকে আক্রমণের সাথে যুক্ত। আমার অফিসের অনেকেই এই নোটিশ পেয়েছেন। এইসব ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা কিংবা ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর আসল কারণ হচ্ছে আদানি। এতদিন পর বিরোধীরা অবশেষে সঠিক জায়গায় তির মেরেছে। দেশের রাজনীতির গোপন সত্যিটা শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে বিরোধীরা।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গল্পের ছলে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে রাহুল জানান, “বিরোধীরা এতদিন ভুল রাজাকে আক্রমণ করছিলেন। আসল রাজা মোদী নন। তাঁর হাতে কোনও ক্ষমতাই নেই। সব ক্ষমতা আসলে লুকিয়ে রাখা আছে আদানির মধ্যে। রাজার প্রাণভোমরা যেমন তোতাপাখির মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল, এখানেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রাণভোমরা রয়েছে আদানি নামের তোতাপাখির মধ্যে। সেইখানে আক্রমণ করতেই মোদীর বিপদঘণ্টা বেজে গিয়েছে। আর সেই কারণেই বিরোধীদের নজর ঘোরাতে এসব ফোন হ্যাকিং ও ইডি-সিবিআইয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন