নিটের পর এবার নেট। পরীক্ষা হওয়ার একদিনের মধ্যে বাতিল হয়ে গেল ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলে বুধবার সন্ধ্যায় নেট বাতিল করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা।
বুধবার রাতেই পরীক্ষা বাতিলের খবর প্রকাশ্যে আসে। এরপরই মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “নরেন্দ্র মোদীজি, আপনি পরীক্ষা নিয়ে অনেক চর্চা করেছেন। কিন্তু আপনি নেট পরীক্ষা পে চর্চাটা কখন করছেন?” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ইউজিসি নেট বাতিল লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার আবেগকে ধাক্কা দিয়েছে।” এরপরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন নিট পরীক্ষা কবে বাতিল হচ্ছে তা নিয়ে।
শুধু খাড়্গেই নয়, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করেছে কংগ্রেসও। দলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, “গত কাল (মঙ্গলবার) দেশের বিভিন্ন শহরে ইউজিসি নেট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। আর বুধবার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেল। প্রথমে নিট, তার পর নেট-এর প্রশ্নপত্র ফাঁস হল। মোদী সরকার আসলে প্রশ্নফাঁসের সরকার হয়ে উঠেছে।”
পরীক্ষা বাতিল নিয়ে মোদীর সমালোচনা করতে বাদ যায়নি এরাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সরাসরি কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের ইস্তফার দাবি তোলা হয়। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “এনডিএ সরকারের আমলে প্রতি দিন পড়ুয়াদের জীবন এবং ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। তবু লজ্জাজনক ভাবে সরকার কোনও দায় নিচ্ছে না।”
অন্যদিকে, পরীক্ষা বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে মোদী সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। এটিকে দেশের বিরুদ্ধে একটি ‘বড় চক্রান্ত’ বলেও অভিহিত করেন অখিলেশ। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের দাবি, গোটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় জরুরী অবস্থা চলছে।
মঙ্গলবার প্রায় ৯ লক্ষ পরীক্ষার্থী দুটি অর্ধে নেট পরীক্ষা দিয়েছে। এরপর সরকারি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ‘ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার’ (১৪সি)-এর জাতীয় সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালিটিক্স ইউনিট থেকে পাওয়া কিছু তথ্যের ভিত্তিতে পরীক্ষায় ‘প্রশ্ন ফাঁস’ সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়টি নজরে। এরপরেই মন্ত্রকের কাছে পরীক্ষা বাতিলের বার্তা পাঠায় এনটিএ। জানা গেছে, এই প্রশ্নফাঁসের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রক।
প্রতিবছর জুন এবং ডিসেম্বর দুবার করে হয় ইউজিসি নেট পরীক্ষা। এটি ‘জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ’ প্রদান এবং দেশের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর’ নিয়োগের জন্য যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা। পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বে থাকে এনটিএ। চলতি বছর ১৬ জুন হওয়ার কথা ছিল নেট। কিন্তু গত মাসের শেষে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় কিছু কারণবশত পিছিয়ে ১৮ জুন হবে পরীক্ষা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন