ভূমিপুত্র না হলেও জম্মু ও কাশ্মীরে মিলবে ভোটাধিকার। বুধবার, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হৃদেশ কুমার জানান, 'রাজ্যে বসবাসকারী দেশের অন্যপ্রান্তের লোকজনও এবার ভোটাধিকার পাবেন।'
তিনি জানান, 'ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ডোমিসাইল সার্টিফিকেট লাগবে না। জম্মু ও কাশ্মীরে কর্মরত সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরাও ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে পারবেন। এছাড়া, বাইরের বাইরে থেকে আসা চাকুরিজীবি, পড়ুয়ারাও ভোট দিতে পারবেন।' তিনি আরও জানান, 'এই নয়া সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে চলেছে।'
এদিকে, এই ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রতিবাদে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরেরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। তাঁদের অভিযোগ, ভিনরাজ্য থেকে ভোটার আমদানি করে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতেই এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
ন্যাশনাল কনফারেন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর আবদুল্লাহ টুইটারে লিখেছেন, 'জম্মু ও কাশ্মীরের আসল ভোটারদের সমর্থন নিয়ে কি বিজেপি এতটাই অনিশ্চয়তায় ভুগছে যে, সিট পেতে বাইরে থেকে ভোটার আনতে হচ্ছে? মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিলে এই সমস্ত কোনও কিছুই বিজেপির কাজে আসবে না।'
পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি টুইটে জানান, 'বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে কাজ করছে কেন্দ্র। সেই লক্ষেই জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর, এখন নির্বাচনী ফলফলকে প্রভাবিত করতে অ-স্থানীয়দের ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এদের আসল লক্ষ্য স্থানীয়দের নিরস্ত করে লৌহ হাতে জম্মু কাশ্মীরের উপর শাসন চালানো।'
শুধু তাই নয়, জম্মু-কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের (PC) নেতা সাজাদ লোন এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, 'এটি বিপজ্জনক। আমি জানি না তারা (পড়ুন-BJP) কী অর্জন করতে চায়! এটি দুষ্টুমির চেয়ে অনেক বেশি।' কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, 'অনুগ্রহ করে ১৯৮৭ সালের কথা মনে রাখবেন। ১৯৮৭ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন না। এটি বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।'
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া শেষ হয়। তারপরে অনেকেই আশা করেন, চলতি বছরের শেষের দিকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে জম্মু ও কাশ্মীরে। উপত্যকায় দ্রুত নির্বাচনের দাবিও জানাচ্ছিল রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু, এবছর তা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
কেননা, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের একটি সময়সূচী প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তাতে জানা যায়, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর কারও কোনও আপত্তি থাকলে, তা জানানো যাবে- ২৫ অক্টোবরের মধ্যে এবং অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হবে ১০ নভেম্বরের মধ্যে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ নভেম্বর।
আর, জম্মু-কাশ্মীরের এই ভোটার তালিকায় জায়গা পাচ্ছেন বাইরের বাইরে থেকে আসা চাকুরিজীবি, পড়ুয়া ও সেনা জওয়ানেরা। এর ফলে, প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে চলেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন