প্রায় বিরোধীশূন্য লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ক্রিমিনাল ল বিল। নতুন এই তিন বিলের নাম ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩ এবং ভারতীয় সাখ্য (দ্বিতীয়) বিল, ২০২৩। গতকালই এই তিন বিল লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল।
বর্তমানে চালু থাকা কোড অফ ক্রিমিনাল প্রোসিডিওর অ্যাক্ট, ১৮৯৮, দ্য ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০ এবং দ্য ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২-এর বদলে নতুন এই তিন আইনের প্রস্তাব পেশ করা হয়।
বুধবার এই বিল সংক্রান্ত এক বিতর্কে অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, বহু আলোচনার পর প্রস্তাবিত এই তিন বিল তৈরি করা হয়েছে। সংসদে পেশ করার আগে এর প্রতিটি দাড়ি কমা বারবার পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান ফৌজদারি আইনগুলি শাস্তি দেওয়ার জন্য ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন করে এবং ন্যায়বিচার করেনা।
লোকসভায় ধ্বনি ভোটে এই তিন পাশ হওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ বলেন, "তিনটি নতুন বিল ভারতীয় চিন্তাধারার উপর ভিত্তি করে একটি বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়... তিনটি প্রস্তাবিত ফৌজদারি আইন মানুষকে ঔপনিবেশিক মানসিকতা এবং এর প্রতীকগুলি থেকে মুক্ত করবে।"
উল্লেখ্য বর্তমানে সংসদের দুই কক্ষ থেকে মোট ১৪৩ জন সাংসদ বহিষ্কৃত। গত দু’দিনের মত বুধবারও লোকসভা থেকে দুই সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল ১৪১ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার পর কার্যত বিরোধীশূন্য অবস্থায় এই তিন বিল পেশ করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিরোধীরা। তাদের মতে, ‘সংসদে একনায়কতন্ত্র চলছে’। সরকার সমস্ত বিরোধী কন্ঠস্বরকে চেপে দিয়ে কোনও বিতর্ক ছাড়াই সংসদে গুরুত্বপূর্ণ সব বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছে।
প্রসঙ্গত, গত তিনদিনে সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ - লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে বিরোধী ১৪১ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর মহীশূরের কোদাগু-র বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার দেওয়া পাশ নিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন দুই যুবক। এরপর দর্শকাসন থেকে লাফ দিয়ে সরাসরি ঢুকে পড়েন অধিবেশন কক্ষে এবং হলুদ রঙের স্প্রে করতে শুরু করেন। এই ঘটনার পরেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে সংসদে নিরাপত্তা বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানো এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশদ বিবৃতি দাবি করা হয়। বিরোধীদের লাগাতার বিক্ষোভের জেরে ধাপে ধাপে সংসদের দুই কক্ষ থেকে মোট ১৪১ জন সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছেন।
এর আগে আগস্ট মাসে লোকসভায় এই তিন বিল পেশ করা হয়। পরে এই তিন বিল তুলে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে কিছু সংশোধনীর পর ফের তা পেশ করা হয়েছে। নতুন এই তিন বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩ এবং ভারতীয় সাখ্য (দ্বিতীয়) বিল, ২০২৩।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন