প্রায় বিরোধীশূন্য সংসদে পেশ করা হল ক্রিমিনাল ল বিল। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাখ্য অধিনিয়ম বিল এদিন লোকসভায় পেশ করা হয়। বর্তমানে চালু থাকা কোড অফ ক্রিমিনাল প্রোসিডিওর অ্যাক্ট, ১৮৯৮, দ্য ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০ এবং দ্য ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২-এর বদলে নতুন এই তিন আইনের প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে লোকসভা থেকে ৯৫ জন সাংসদকে চলতি অধিবেশনের বাকি দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
১৪১ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার পর কার্যত বিরোধীশূন্য অবস্থায় এই তিন বিল পেশ করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধীরা। তাদের মতে, ‘সংসদে একনায়কতন্ত্র চলছে’। সরকার সমস্ত বিরোধী কন্ঠস্বরকে চেপে দিয়ে কোনও বিতর্ক ছাড়াই সংসদে গুরুত্বপূর্ণ সব বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছে।
কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তেওয়ারি, যিনি মঙ্গলবার সংসদ থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন এদিন তিনি নতুন ফৌজদারি আইনের বিলগুলির একটি নির্দিষ্ট উল্লেখ করে জানান সংসদকে অবৈধ করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “এইভাবেই সংসদে সবচেয়ে কঠোর আইন পাস করার কাঠামো তৈরি করা হয়েছে যা এই দেশকে একটি পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করবে।”
কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সূরজেওয়ালা বলেন, “বিজেপি এই তিনটি আইন নিয়ে আলোচনা করতে চায় না; ওই তিনটি আইনের মাধ্যমে বুলডোজ করে তারা যা খুশি তাই করতে চায়। আপনারা কি চান না দেশের মানুষ জানুক এই বিধানটি কী? এই আইনের ত্রুটি কী? কারণ জনগণের জীবন এই আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।”
প্রসঙ্গত, গত তিনদিনে সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ - লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে বিরোধী ১৪১ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর মহীশূরের কোদাগু-র বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার দেওয়া পাশ নিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন দুই যুবক। এরপর দর্শকাসন থেকে লাফ দিয়ে সরাসরি ঢুকে পড়েন অধিবেশন কক্ষে এবং হলুদ রঙের স্প্রে করতে শুরু করেন। এই ঘটনার পরেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে সংসদে নিরাপত্তা বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানো এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশদ বিবৃতি দাবি করা হয়। বিরোধীদের লাগাতার বিক্ষোভের জেরে ধাপে ধাপে সংসদের দুই কক্ষ থেকে মোট ১৪১ জন সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছেন।
এর আগে আগস্ট মাসে লোকসভায় এই তিন বিল পেশ করা হয়। পরে এই তিন বিল তুলে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে কিছু সংশোধনীর পর ফের তা পেশ করা হয়েছে। নতুন এই তিন বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩ এবং ভারতীয় সাখ্য (দ্বিতীয়) বিল, ২০২৩।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন