১৫ জন সাংসদের সাসপেনশন বিতর্কের মাঝেই এবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড হলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। একইসঙ্গে আরও কয়েকজন সাংসদকে বাকী অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করায় সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬। এঁদের মধ্যে ৪৩ জনই নিরাপত্তা বিধি ভঙ্গের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি জানিয়েছিলেন।
গত কয়েকদিন ধরেই অধিবেশন কক্ষের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। বিরোধীদের প্রতিবাদের জেরে একাধিক মুলতুবি হয়েছে অধিবেশনের কাজ। এদিন বিরোধীদের সম্মিলিত প্রতিবাদের পর তাঁদের বাকী অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করেন লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লা।
সাসপেন্ড হবার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, সংসদে একনায়কতন্ত্র চলছে এবং সরকার সংসদকে বিজেপির সদরদপ্তরের মত চালাচ্ছে।
এদিন এক এক্স বার্তায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকাঅর্জুন খাড়গে বলেন, "প্রথমে অনুপ্রবেশকারীরা পার্লামেন্টে হামলা চালায়। তারপর সংসদ ও গণতন্ত্রকে আক্রমণ করছে মোদী সরকার। ৪৭ জন সাংসদকে বরখাস্ত করে স্বৈরাচারী মোদী সরকার সমস্ত গণতান্ত্রিক নিয়মকে লঙ্ঘন করছে।
আমাদের দুটি সহজ এবং প্রকৃত দাবি আছে- ১. সংসদের নিরাপত্তায় অমার্জনীয় লঙ্ঘনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংসদের উভয় কক্ষে বিবৃতি দিতে হবে। ২. একই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।
খাড়গে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে পারেন; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন। কিন্তু, সংসদ - যা ভারতের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে সেখানে তাদের জবাবদিহি শূন্য।
কম সংখ্যক বিরোধী যুক্ত সংসদে মোদি সরকার এখন গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলিকে বুলডোজ করতে পারে, কোনো বিতর্ক ছাড়াই যেকোনো ভিন্নমতকে চূর্ণ করতে পারে।"
এদিন অধীর রঞ্জন চৌধুরী ছাড়াও গৌরব গগৈ, কে সুরেশ, তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ ব্যানার্জি, সৌগত রায়, প্রতিমা মণ্ডল, ডিএমকে-র এ. রাজা, দয়ানিধি মারান, টি আর বালু এবং আরএসপির এন কে প্রেমচন্দ্রন সহ বেশ কয়েকজন সদস্যকে অধিবেশনের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হন বিরোধী সাংসদরা। এরপরেই দফায় দফায় মুলতুবির পর একসঙ্গে ৩০ জনের বেশি সাংসদকে লোকসভার বাকী অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে এতজন সাংসদের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন।
বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে উভয় কক্ষে (লোকসভা এবং রাজ্যসভা) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের দাবি করে চলেছে। এদিনের ঘটনার পরেই বাকি দিনের মত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে বিকেল ৪টে পর্যন্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন