দিনভর বিরোধীদের প্রতিবাদের জেরে শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজ্যসভাও মুলতুবি করে দেওয়া হল। এদিন রাজ্যসভা মুলতুবি হওয়ার আগে ধ্বনি ভোটে ৪৫ জন সাংসদকে অধিবেশনের বাকি দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। যে ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছে রাজনৈতিক মহল। এদিন লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৭৮ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। এবারের অধিবেশনে এখনও পর্যন্ত মোট সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের সংখ্যা ৯২।
বিরোধী সাংসদরা ১৩ ডিসেম্বর সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ইস্যুতে উভয় কক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিশদ বিবৃতি দাবি করেন। এরপরেই সংসদের উচ্চকক্ষ থেকে কংগ্রেস সহ বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করা হয়। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ, কেসি ভেনুগোপাল এবং রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা; তৃণমূল কংগ্রেসের সুখেন্দু শেখর রায় এবং শান্তনু সেন এবং আরজেডির মনোজ কুমার ঝাকেও এদিন সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এঁরা ছাড়াও প্রমোদ তিওয়ারি, অমি ইয়াজনিক, নারানভাই জে রাথওয়া, সৈয়দ নাসির হুসেন, ফুলো দেবী নেতাম, শক্তিসিংহ গোহিল, রজনী পাতিল, রঞ্জিত রঞ্জন, ইমরান প্রতাপগড়ি, মহম্মদ নাদিমুল হক, আবির রঞ্জন বিশ্বাস, মৌসম নূর, প্রকাশ চিক বারাইক, সামিরুল ইসলাম, এম শানমুগাম, এনআর এলাঙ্গো, কানিমোঝি এনভিএম সোমু, আর গিরিরাজন, ফাইয়াজ আহমেদ, ভি শিবাদাসন, রাম নাথ ঠাকুর, অনিল প্রসাদ হেগড়ে, বন্দনা চ্যাবন, রাম গোপাল যাদব, জাভেদ আলী খান, মহুয়া মাজি, জোসে কে মানি, অজিত কুমার ভূঁইয়াকে অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রাজ্যসভার ১১ জন সাংসদের বরখাস্তের বিষয়টি প্রিভিলেজ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রিভিলেজ কমিটির কাছে যেসব সাংসদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জেবি মাথার হিশাম, এল হনুমান্থাইয়া, নীরজ ডাঙ্গি, রাজমণি প্যাটেল, কুমার কেতকার, জিসি চন্দ্রশেখর, বিনয় বিশ্বম, সন্দোষ কুমার পি, এম মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, জন ব্রিটাস এবং এ এ রহিম।
৪৫ জন সাংসদকে বরখাস্ত করার ঘোষণা করার পরে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেন, অনেক সদস্য ইচ্ছাকৃতভাবে চেয়ারম্যানকে উপেক্ষা করছেন। বারবার বাধা পাওয়ার কারণে সংসদ ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না।
বিরোধীদের স্থগিতাদেশের জেরে এদিন রাজ্যসভার অধিবেশন দিনের মত মুলতবি হয়ে যায়। এর আগে, লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী সহ ৩৩ জন সাংসদকে শীতকালীন অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য সাসপেন্ড করা হয়।
বিরোধীরা লাগাতার সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করায় সংসদের দুই কক্ষে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়। এখনও পর্যন্ত সংসদের অধিবেশন চলাকালীন অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়া এবং হলুদ রঙ স্প্রে করার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন