গুজরাটের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো নিয়ে এবার প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। মোরবি সেতু বিপর্যয়ের পর মোরবির সরকারি হাসপাতালের অতীত ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে - মোরবির সরকারি হাসপাতালে রাতারাতি ৪ টি নতুন ওয়াটার কুলার বসানো হয়েছিল। কিন্তু, এর মধ্যে একটিতেও জল ছিল না।
রবিবার, সেতু বিপর্যয়ে ১৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন বহু মানুষ। অনেককেই চিকিৎসার জন্য মোরবি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরের আগে ভোটমুখি গুজরাটের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে- সেজন্য কী তাড়াহুড়ো করে ‘শো অফ’ করছে রাজ্য প্রশাসন!
এক প্রতিবেদনে NDTV জানিয়েছে, মোরবি কান্ডের পর সরকারি হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ডকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে লিনেনের নতুন বিছানায় সহ রোগীদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁদেরকে বলা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হবে। তারপর- মঙ্গলবার বিকালে সেই ওয়ার্ডে গিয়ে কিছু আহতদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
রোগীর সঙ্গে থাকা এক মহিলা বলেন, ‘এ সবই দেখানোর জন্য। এই ওয়াটার কুলার আগে এখানে ছিল না।" অন্য এক মহিলা জানান, হাসপাতালে সাধারণ সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মোরবি সেতু বিপর্যয়ের পরে আহতদের এখানে আনা হয়েছে। তারপরেই শ্রমিকরা (হাসপাতাল মেরামতের জন্য) এখানে চলে আসেন। কারণ, এটা ধরে নেওয়া হয়েছিল- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখানে আসতে পারেন।’
এছাড়া, মোরবি থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে জামনগরের একটি হাসপাতালে কিছু রোগী স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। সেখানেও একই ঘটনা ঘটেছে। গ্রাউন্ড ফ্লোরের (এক তলার) একটি খালি ওয়ার্ড ছিল, তা ভালোভাবে পরিস্কার করে- সেখানে নতুন বেড দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, রোগীদের বেডের পাশে রাতারাতি নতুন IV ড্রিপ স্ট্যান্ড (IV drip stands) দেওয়া হয়েছে। আর, হাসপাতালের বাইরের অংশ রং এবং ভিতরে মেরামতের জন্য ৪০ জন কর্মী সারারাত কাজ করেছে। টয়লেটে বসানো হয়েছে নতুন টাইলসও।
এর আগে- এ নিয়ে বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের তরফে এক টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘মঙ্গলবার মোরবির সরকারি হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই হাসপাতালে মেরামতির কাজ চলছে। নতুন করে রং করা হচ্ছে, টাইলস বসানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এসে ছবি তুলবেন, সেই কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টার কোনও কমতি রাখছেন না। তাদের একটুও লজ্জা হচ্ছে না। এত মানুষ মারা গিয়েছেন, তার মধ্যেও উৎসবের তোড়জোড় করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন