মিড-ডে মিল প্রকল্প সরকার চালু করেছিল স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাবার দেবার জন্য। খাবারের তালিকায় থাকার কথা সোয়াবিন, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি খাবার, কিন্তু সেদিন উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলার জামালপুর ব্লকের সিউর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছবিটা ছিল আলাদা। ২০১৯ সালের ২২আগস্ট, বিদ্যালয়ের দালানে বসে বাচ্চাদের নুন দিয়ে শুকনো রুটি খেতে দেখা যায়। এ ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে।
এই ভিডিওটি তুলে সিউর বিদ্যালয়ের সত্যকে সামনে এনেছিলেন স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক পবন জয়সয়াল। তারপর পবনের নামে মামলা করা হয়েছিল, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে। তবে তাঁর যুদ্ধ শেষ হয়নি তখনও, লাগাতার ৩ বছর ধরে এই সত্য উদঘাটনের যুদ্ধ চালিয়ে গেছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর সরকারের চাপে প্রচণ্ড আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন পবন। সাথে তাঁর শরীরে বাসা বাঁধে মারণ রোগ ক্যান্সার। সেই ক্যান্সারেরই অবশেষে জীবনযুদ্ধে হার মানতে হল সাংবাদিক পবন জয়সয়ালকে।
মিড ডে মিল দুর্নীতির খবর ফাঁস করার পর, সরকার তরফে জানানো হয়েছিল গ্রামবাসী ও পবন মিলে সরকারের বিরুদ্ধে এই কাজ করেছে, যোগী সরকারকে কলঙ্কিত করার জন্য। ভিডিওটি করে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন পবন, তাঁর বক্তব্য ছিল, যে কেও তাঁর এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে পারেন, তিনি সেই স্কুলে যাবার আগে স্থানীয় শিক্ষা আধিকারিক ব্রজেশ কুমার সিং এর সাথে কথা বলেছিলেন। সাংবাদিক হিসাবে তাঁর প্রশ্ন ছিল, মিড ডে মিলের বরাদ্দ টাকা যা সরকার তরফে আসছে তা কোথায় যাচ্ছে?
এই ঘটনার পর মির্জাপুরের জেলাশাসক সেই বিদ্যালয়ে যান পবনের বানানো ভিডিওর ওপর ভিত্তি করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পঞ্চায়েতের সুপারভাইজারকে বরখাস্ত করেন। কিন্তু পরে পবনের ওপর সরকার তরফে যে মামলা হয় তা আসলে সাংবাদিকতার ওপর আক্রমণ বলে দাবী করে এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন