"মানুষের স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ বটে। কিন্তু ধর্মকে কোনোভাবেই অবহেলা করতে পারবো না।" উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে চলা কুম্ভমেলার জনস্রোত প্রসঙ্গে একথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াত। অর্থাৎ দেশের করোনা পরিস্থিতি যত ভয়াবহই হোক না কেন, কুম্ভমেলার জনস্রোতে যে লাগাম টানা হবে না, তা কার্যত বুঝিয়ে দিলেন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রতি ১২ বছর অন্তর হওয়া কুম্ভ মেলা এই বছর এমন এক অসাধারণ পরিস্থিতির মধ্যে হচ্ছে, যখন দেশে দৈনিক সংক্রমণ ২ লাখের গন্ডি ছুঁই ছুঁই। এই কুম্ভমেলা সংক্রমণের 'সুপারস্প্রেডার' হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেই বিষয়টিকে যে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে মনে হয় না।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মানুষের স্বাস্থ্যকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাসকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যায় না।" তিনি জানান, "স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে। সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বেশ ভালো। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রয়েছে।"
এরপর হরিদ্বারের কুম্ভ মেলার সাথে নিজামউদ্দিন মারকাজের তুলনা করে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কুম্ভ এবং মারকাজের মধ্যে কোনও তুলনা হওয়া উচিত না। মারকাজ কোঠির মতো একটি বদ্ধ স্থানে হয়েছিল, সেখানে কুম্ভ মেলা হচ্ছে গঙ্গার ঘাটে খোলা জায়গায়।" তাঁর আরও যুক্তি, "কুম্ভমেলায় যে পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে, তাঁরা কেউ বাইরের লোক নয়, তাঁরা আমাদের নিজেদের লোক। তাছাড়া মারকাজের সময় করোনভাইরাস সম্পর্কে মানুষের মধ্যে তেমন সচেতনতা ছিল না বা কোন নির্দেশিকা ছিল না। মারকাজের অংশগ্রহণকারীরা কত দিন বদ্ধ ঘরে থেকেছিলেন, কেউ তা জানতেন না। এখন কোভিড নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে।"
তিনি আরো বলেন, "কুম্ভ ১২ বছর অন্তর একবার হয়। এর সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের বিশ্বাস-আবেগ জড়িয়ে থাকে। কোভিড চ্যালেঞ্জের মাঝেই এটাকে সফলভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য।"
সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৮ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী শাহীস্নানের জন্য গঙ্গার তীরে ভিড় জমিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মেলার মধ্যে কোথাও থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ পুণ্যার্থীর মুখেই নেই মাস্ক। গত দুদিনেই হরিদ্বারে হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন