“নিম্ন মানসিকতা এবং প্রতিহিংসার আর এক নাম মোদী। নিরাপত্তাহীনতায় ভারে ঝুঁকে পড়া একজন ছোট, অত্যন্ত ছোট মানুষ হলেন আমাদের স্বঘোষিত বিশ্বগুরু।“ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর নামে নামাঙ্কিত নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি (NMML) সোসাইটির নাম থেকে নেহেরুর নাম তুলে দেওয়ার মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে এই মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ।
টুইটারে তিনি আরও লেখেন, “৫৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে, নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি (NMML) একটি বিশ্বব্যাপী বুদ্ধিবৃত্তিক ল্যান্ডমার্ক এবং বই ও আর্কাইভের ভান্ডার হয়ে রয়েছে। এখন থেকে এটিকে প্রাইম মিনিস্টার মিউজিয়াম অ্যান্ড সোসাইটি বলা হবে। ভারতীয় জাতি-রাষ্ট্রের স্থপতির নাম এবং উত্তরাধিকারকে বিকৃত, অপমানিত এবং ধ্বংস করার জন্য কী করেননি মিঃ মোদী?“
দিল্লির তিন মূর্তি ভবনে অবস্থিত দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর নামে নামাঙ্কিত নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি (NMML) সোসাইটির নাম থেকে নেহেরুর নাম তুলে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। বৃহস্পতিবার NMML সোসাইটির একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির সহ-সভাপতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের পরিবর্তে প্রাইম মিনিস্টার মিউজিয়াম অ্যান্ড সোসাইটি করা হয়েছে।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে টুইটারে লেখেন, “যাদের কোনো ইতিহাস নেই, তারা অন্যের ইতিহাস মুছে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে। নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির নাম পরিবর্তনের দুর্ভাগ্যজনক প্রচেষ্টা আধুনিক ভারতের স্থপতি এবং গণতন্ত্রের নির্ভীক অভিভাবক পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ব্যক্তিত্বকে হেয় করতে পারে না। এটি শুধুমাত্র BJP এবং RSS-এর নিম্ন মানসিকতা এবং একনায়কত্বমূলক মনোভাবের প্রকাশ।“
কংগ্রেসকে এই নিয়ে রাজনীতি করতে নিষেধ করেছেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি যে পি নাড্ডা। তিনি বলেন, “একটি নির্দিষ্ট রাজবংশের বাইরেও এমন নেতা আছেন যারা আমাদের দেশের সেবা করেছেন – এই সহজ সত্যটা মেনে নিতে পারছে না কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় রাজনীতির বাইরের একটি প্রচেষ্টা এবং কংগ্রেসের কাছে এটি উপলব্ধি করার মতো দৃষ্টিভঙ্গির অভাব রয়েছে।“
উল্লেখ্য, তিন মূর্তি হাউস ১৯২৯-৩০ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি ছিল এডউইন লুয়েন্সের সাম্রাজ্যের রাজধানী। ১৯৪৮ সালের আগস্ট মাসে এটিকে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সরকারি বাসভবন করা হয়। ১৯৬৪ সালের ২৭ মে, তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি এখানে থাকতেন। এরপরই তৎকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ভবনটি তাঁর নামে উৎসর্গ করা হবে এবং এটিকে গ্রন্থাগার ও মিউজিয়াম করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন