কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর, এমন জল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। সোনিয়া গান্ধী-র সাথে দফায় দফায় বৈঠকও করেছিলেন। অবশেষে সমস্ত জল্পনার যবনিকা টেনে তিনি জানিয়ে দেন কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন না। মঙ্গলবার ফের কংগ্রেসে যোগদান করার বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে - সেই প্রসঙ্গে হাত জোড় করে পিকে জানান, "কংগ্রেস? না, ধন্যবাদ!" তিনি আর কংগ্রেসে কোনোমতেই যোগদান করবেন না।
মূলত, কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের সাথে মতের মিল না হওয়াটাই প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। পিকে-র বক্তব্য, "হামকো ভি ডুবা দেগা।" অর্থাৎ পিকে-এর মতে কংগ্রেসের বর্তমান কর্মকর্তারা নিজেরাও ডুববে, তাঁকেও ডুবিয়ে দেবে। কংগ্রেস এমনই একটি দল যারা কখনই তাঁর সাথে একত্রে কাজ করবে না। দলের মধ্যেও কোনও একাগ্রতা নেই।
প্রশান্ত কিশোর তাঁর নিজের রাজ্যে একটি বিকল্প সরকার সম্পর্কে জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য বিহারের গ্রামগুলিতে সফরকালে এই ঘোষণা করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে হাত জোড় করে পিকে বলেন, "২০১৫ সালে আমরা বিহার জিতেছি। ২০১৭ সালে আমরা পাঞ্জাব জিতেছি। ২০১৯ সালে জগন মোহন রেড্ডি অন্ধ্র প্রদেশে জিতেছে। আমরা তামিলনাড়ু এবং বাংলায় জিতেছি। ১১ বছরে, আমরা শুধুমাত্র একটি নির্বাচনে হেরেছি... ২০১৭ সালের উত্তর প্রদেশ নির্বাচন। তাই আমি আর কখনই কংগ্রেসের সাথে কাজ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" বুধবার বৈশালীতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশপ্রসাদ সিং-কে শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত একটি সমাবেশে এমনই বক্তব্য রাখেন।
সম্প্রতি রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের বৈঠককে ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেন পিকে। শুধু তাই নয়, এ বছরের শেষের দিকে গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশ নির্বাচনে কংগ্রেস দলের ভবিষ্যৎ যে কার্যত ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে তার আগাম বার্তা দেন তিনি।
অবশ্য এর আগেও কংগ্রেসের সাথে সহযোগিতা করার ব্যাপারে পিকে-এর সাথে কংগ্রেসের আলোচনা এক বছরে পরপর দুবার ফ্লপ হয়েছিল কারণ পিকে-এর ভূমিকা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে মতবিরোধ ছিল৷
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে পিকে গান্ধী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দলের পুনরুত্থানের বিষয়ে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সেই সময় কংগ্রেস দলে সনিয়া গান্ধীকে অ-গান্ধী কার্যনির্বাহী সভাপতি বা সহ-সভাপতি নিয়োগ করার জন্য পিকে সুপারিশ করেছিলেন। এছাড়াও রাহুল গান্ধীকে সংসদীয় বোর্ডের প্রধান করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন। কংগ্রেসের উচ্চস্তরের নেতাদের সামনে ৬০০টি স্লাইড নিয়ে পিকে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন।
বেশ কয়েকদিনের আলোচনার পর, কংগ্রেসে যোগদানের বিষয়ে পিকে তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। এরপর তাঁকে "এমপাওয়ারড অ্যাকশন গ্রুপ"-এর সদস্য হিসেবে পার্টির জন্য কাজ করতে বলা হয়; তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই গ্রুপের কোনও কর্তৃত্ব নেই। তিনি সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করেন এবং এরপর থেকে ক্রমাগত কংগ্রেস দলের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে পিকে-এর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন